রাজস্ব কর্মকর্তা জাবেদ, সিপাহী আল আমিনের পাশে সহকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার কাছে গেরে গেলেন রাজস্ব কর্মকর্তা আনোয়ার জাবেদ। এ রাজস্ব কর্মকর্তা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ) কর্মরত ছিলেন। রাজস্ব আহরণের মতো রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হন। ১৩দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর অবশেষে হার মানলেন তিনি। ৭ অক্টোবর না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রেখে গেছেন। করোনা মহামারিতে মৃত্যুবরণকারী আনোয়ার জাবেদ এর সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারই শেষ কর্মস্থলের সহকর্মীরা। দেওয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তা।

ভ্যাট ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটে জাবেদ এর একাধিক সহকর্মী জানিয়েছেন, আনোয়ার জাবেদ এ কমিশনারেটে কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ তেজগাঁও বিভাগে তার বদলি হয়। কর্তব্যরত অবস্থায় তার জ্বর, কাশিসহ করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। ঠান্ডাজনিত সমস্যায় তার নিউমোনিয়া হয়ে যায়। নমুনা পরীক্ষার পর ২৬ সেপ্টেম্বর তার করোনা সনাক্ত হয়। অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ৭ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ রাজস্ব কর্মকর্তা ১৯৬৬ সালের ২ মে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগর নাসিরাবাদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তারা আরো জানান, জাবেদ এর তিন সন্তানই মাদ্রাসা ও কলেজে লেখাপড়া করছেন। জাবেদ ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়ে। ‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’-এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে কমিশনার ডা. এসএম হুমায়ুন কবীর এর আহ্বানে সাড়া দেয় তারই সহকর্মীরা। এছাড়া কমিশনারেট থেকেও সহযোগিতার হাত বাড়ানো হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর ভ্যাট ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটে মরহুম আনোয়ার জাবেদ এর স্ত্রীকে ৪ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আর্থিক সহায়তার ফলে মরহুম জাবেদ এর সন্তানরা লেখাপড়া করতে পারবে। একইসঙ্গে যেকোন প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করা হয়।

ভ্যাট ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একই কমিশনারেটের সিপাহী মো. আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার ক্যান্সার (প্রেনক্রিয়াটিকস লিমফোমা) ধরা পড়ে। চিকিৎসক তাকে বোনমেরু ট্রান্সপ্লান্ট করার জন্য বলেছেন। তার বয়স মাত্র ৩২ বছর। এ চিকিৎসার জন্য যে অর্থ প্রয়োজন তা তার এবং তার পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। কমিশনার ডা. এসএম হুমায়ুন কবীর এর উদ্যোগে ৯ ডিসেম্বর মো. আল আমিন এর চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে যেকোন সহায়তার জন্য ভবিষ্যতেও তার পক্ষে সক্রিয়ভাবে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।

কমিশনার ডা. এসএম হুমায়ুন কবীর দুই সহকর্মীকে সহায়তায় এগিয়ে আসায় সহকর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। একইসঙ্গে মানুষের কল্যাণে ভবিষ্যতেও সকলে সকলের পাশে থাকব এ অঙ্গীকার প্রত্যাশা করেন।

আরো পড়ুন-

করোনায় আরও এক রাজস্ব কর্মকর্তার মৃত্যু

###

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০