নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন ঢাকা বন্ড কমিশনারেট অর্থবছর শেষ হওয়ার তিন মাস আগেই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত প্রায় ১১২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আদায় প্রবৃদ্ধি ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের বন্ডের অনিয়ম উদ্ঘাটন ও প্রায় ৩০৪ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। বন্ড কমিশনারেট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বন্ড কমিশনারেট সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছর ঢাকা বন্ড কমিশনারেটের মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দুই হাজার ৬৫৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ৯৪৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে দুই হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। মার্চ (জুলাই-মার্চ) পর্যন্ত মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৩৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আদায় প্রবৃদ্ধি ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। প্রতিষ্ঠানটি হোম কনজাম্পশন, জরিমানা, অর্থদণ্ড, বকেয়া ও অন্যান্য খাত থেকে এসব রাজস্ব আদায় করেছে। তবে অর্থবছরের বাকি তিন মাসে প্রতিষ্ঠানটি আরও প্রায় ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করতে পারবে বলে জানা গেছে।
বন্ড কমিশনারেটের গত অর্থবছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার ৮৮৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় করেছে দুই হাজার ৯১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। গত অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রা প্রায় তিনগুণ বাড়িয়ে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করায় চলতি অর্থবছর দুই হাজার ৬৫৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, ঢাকা বন্ড কমিশনারেট রাজস্ব ফাঁকি ও জালিয়াতির অভিযোগে ৪৮৪টি অনিয়ম মামলা দায়ের করেছে। যার সঙ্গে প্রায় তিন হাজার ১৭৩ কোটি ২৩ লাখ টাকার রাজস্ব জড়িত। এর মধ্যে ২০৩টি রিট মামলায় এক হাজার ৫৪৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ৪৪টি কাস্টমস আপিল মামলায় ৪৫৪ কোটি ১৭ লাখ, ৬৩টি আপিলাত ট্রাইব্যুনাল মামলায় ৭৮৪ কোটি ৮৯ লাখ, ১৭২টি সার্টিফিকেট মামলায় ৩৮৬ কোটি ৭১ লাখ ও দুটি অনিয়ম মামলায় ৩১ লাখ টাকা।
রফতানিমুখী শিল্পকে উৎসাহ দিতে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বন্ড কমিশনারেটের অধীনে ছয় হাজার ৬০৯টি বন্ডেড প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার ৮৫৬টি বন্ডেড প্রতিষ্ঠান চালু ও দুই হাজার ৭৫৩টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চার হাজার ৪৪২টি গার্মেন্টস বন্ডেড প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে চালু রয়েছে দুই হাজার ৩৩২টি। আর বন্ধ রয়েছে দুই হাজার ১১০টি। এরপরের অবস্থানে এক হাজার ৭৫৯টি বন্ডেড প্রতিষ্ঠান রয়েছে রফতানি খাতে। যার মধ্যে বন্ধ ৫৩৬টি। এছাড়া ১৯৯টি ইপিজেড বন্ড, ১৩৩টি সুপারভাইজড বন্ড, ৫১টি হোম কনজাম্পশন বন্ড, ১৯টি ডিউটি ফ্রি শপ বন্ড ও ছয়টি ডিপ্লোম্যাটিক বন্ড প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে ঢাকা বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার ড. আল আমিন প্রামাণিক শেয়ার বিজকে বলেন, যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বন্ড কমিশনারেট অনেক বেশি অনিয়ম রোধে কাজ করছে। এনবিআরের সহায়তায় লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত আদায় সম্ভব হয়েছে। আগামীতে আরও বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।