ঘুমের মধ্যে অনেকে অকারণে পা নাড়েন। এদিক-ওদিক নড়াচড়া করেন। এতে তাদের ঘুমের সমস্যা হয়। তাদের সঙ্গে যারা ঘুমান, তাদেরও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। এ সমস্যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম’।
লক্ষণ: এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি দিনের বেলায় হাঁটাচলা বা কাজকর্মের সময় তেমন কোনো অসুবিধা বোধ করেন না। তারা ভালোই থাকেন। তবে যখন বসে বা শুয়ে থাকেন, তখন পায়ে অস্বস্তি শুরু হয়, পা কামড়ায়, অস্বাভাবিক অনুভূতি হয়। পা নাড়ালে বা হাঁটাচলা করলে তা কমে যায়। এ সমস্যা সকালের দিকে কম থাকে; বিকাল কিংবা রাতে বেড়ে যায়।
কারণ: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ রোগের কারণ অজানা। তবে রক্তশূন্যতা, পারকিনসন বা কিডনি রোগের সঙ্গে রেস্টলেস লেগ সিনড্রোমের যোগাযোগ রয়েছে।
শনাক্ত: রোগীর ইতিহাস ভালো করে শুনলে চিকিৎসকেরা এ রোগ নির্ণয় করতে পারেন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে রক্তশূন্যতা ও কিডনি রোগের পরীক্ষা করা যেতে পারে।
চিকিৎসা: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোমের চিকিৎসাকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-
এক. পরামর্শ; দুই. ওষুধ এবং তিন. কারণ অনুসারে চিকিৎসা।
পরামর্শ: রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করা ভালো। পায়ে টাইট মোজা বা ইলাস্টিক স্টকিংস পরে ঘুমালে এ সমস্যা কমে থাকে। টাইট মোজা না পেলে পায়ের ওপর ভারী কম্বল দিয়ে রাখতে পারেন।
ওষুধ: ডোপামিন-জাতীয় ওষুধ এ রোগের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। অনেক সময় চিকিৎসকেরা এর সঙ্গে ক্লোনাজিপাম-জাতীয় ওষুধও দিয়ে থাকেন।
কারণ অনুসারে চিকিৎসা: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম থাকলে এর পেছনে কোনো কারণ আছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। রক্তশূন্যতা, কিডনির রোগ বা পারকিনসনের মতো রোগ থাকলে সেগুলোর চিকিৎসা করাতে হবে।
ডা. নাজমুল হক
সহকারী অধ্যাপক, নিউরোলজি
মুগদা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা