রানার অটোমোবাইলসের ২১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের ৭০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার বিক্রয়ের গোপন তথ্য উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তদন্তে প্রায় ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় গতকাল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করে এনবিআর সদস্য এবং ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, চলতি বছরের ৩০  মার্চ ভ্যাট গোয়েন্দা টিমপ্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে সংগ্রহ করা নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে ৭০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার বিক্রয়ের গোপন তথ্য পাওয়া যায়।  যেখানে ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রানার অটোমোবাইলস একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। যার অধীন একটি কারখানা, একটি বাণিজ্যিক আমদানিকারক এবং একাধিক শোরুম রয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারক হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল এবং থ্রি হুইলার আমদানি করে কোনোরূপ পরিবর্তন না করে গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করে থাকে। কারখানা হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল সিকেডি অবস্থায় আমদানি করে তা সংযোজন করে সরবরাহ করে। কারখানা থেকে করপোরেট গ্রাহক, ডিলার ও নিজস্ব শোরুমে পণ্য বিক্রয় করে প্রতিষ্ঠানটি।

ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. হারুন অর রশিদের রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের তেজগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে গোয়েন্দা দল দেখতে পায়, প্রতিষ্ঠানটি মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। পরিদর্শনের শুরুতে কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট-সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হলে প্রতিষ্ঠানের সিএফও শনদ দত্ত ভ্যাট কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুসারে ভ্যাট দলিল উপস্থাপন করেন। ভ্যাট ফাঁকির আলামত থাকায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে রাখা কিছু বাণিজ্যিক ও মূসক সংশ্লিষ্ট দলিলাদি জব্দ করা হয়। এসব তথ্য ভ্যাট দলিলাদির সঙ্গে ব্যাপক অসামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়।

তদন্তে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ১ হাজার ৮৩৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮২ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি মাসিক রিটার্নে মোট ১ হাজার ৭৬৪ কোটি ২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা বিক্রয় হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ৭০ কোটি ৪৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬১ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ২৭৬ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। এ ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাসভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৯ হাজার ৩৯৫ টাকা সুদ প্রযোজ্য হবে। সব মিলিয়ে ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬৭১ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফাঁকি দেয়া ভ্যাট আদায়সহ আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০