Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 2:51 pm

রান্নায় তেল কমানোর উপায়

ননস্টিক পাত্র বা ফ্রাইপ্যানে সামান্য পরিমাণ তেল ব্রাশ করে, ঢাকনা ব্যবহার করে সহজেই রান্না করা যায়। আমাদের গতানুগতিক রান্নার ধরনে প্রচুর তেল ও মসলা ব্যবহার করা হয়। অথচ একটু সচেতন হলে তেলের ব্যবহার অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। প্রতিদিনের ক্যালরি চাহিদার ২৫-৩০ শতাংশ তেল ও চর্বিজাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণের কথা। এই পরিমাণের পুরোটাই যে ভোজ্যতেল থেকে হতে হবে, তা কিন্তু নয়। সাধারণ খাবার যেমন বিভিন্ন শর্করা (ভাত, রুটি) ও প্রোটিন (মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডাল, বাদাম, বীজ) থেকেই দৈনিক চাহিদার অনেকটুকু তেল চলে আসে। ফলে রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করার খুব বেশি দরকার আর থাকে না। একটি পরিবারে পাঁচ সদস্য থাকলে দৈনিক রান্নায় ভোজ্যতেলের প্রয়োজন হবে ২০ থেকে ২৫ মিলিলিটার। তার মানে চাইলে এমন পরিবারে মাসে এক লিটারের কম তেল (৭৫০ মিলিলিটারের মতো) ব্যবহার করা যায়। ১ গ্রাম তেল বা চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। অধিক তেল-চর্বি খাওয়া মানে অধিক ক্যালরি। এ ছাড়া উচ্চতাপ দিয়ে রান্না ভোজ্যতেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

কীভাবে কমানো যায়: ননস্টিক পাত্র বা ফ্রাইপ্যানে সামান্য পরিমাণ তেল ব্রাশ করে, ঢাকনা ব্যবহার করে সহজেই রান্না করা যায়। এ ছাড়া আজকাল রোস্টিং প্যান বা এয়ার ফ্রায়ারও ব্যবহার করা হয় কম তেলে রান্নার জন্য। অনেক খাবার তেল দিয়ে কষিয়ে অথবা ডুবোতেলে না ভেজে তেল ছাড়া বা খুব সামান্য তেল ব্যবহার করে বেক করে নেয়া যায়। প্রয়োাজনে মাছ-মাংস ও সবজি সেদ্ধ বা ভাপিয়ে নিয়ে তারপর পছন্দ অনুযায়ী উপকরণ মিশিয়ে বেক করে নিলে তেলের ব্যবহার সীমিত করা যায়।

বোতল থেকে সরাসরি রান্নার পাত্রে তেল না ঢেলে দিয়ে চামচ দিয়ে মেপে নিন। এতে দৈনিক হিসাব থাকবে। খাবার রান্না করার সময় যেসব মসলা সচরাচর ব্যবহার করা হয়, সেগুলো তেলের বদলে একটু একটু করে পানি দিয়ে কষিয়ে নিয়েও তেলের ব্যবহার কমানো যায়। শাকসবজি থেকে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ ও ভিটামিন পাওয়া যায়। কিন্তু উচ্চতাপে অনেকক্ষণ রান্না করলে অধিকাংশ পুষ্টি উপাদানই নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিনের খনিজ লবণ ও ভিটামিন পেতে শাকসবজি ভাপ দিয়ে খেলে সর্বোচ্চ পুষ্টি উপাদান মেলে। এ ছাড়া সালাদ ও স্যুপ করে খেলেও অতিরিক্ত তেলের প্রয়োজন হয় না।

নুরুন নাহার দিলরুবা

পুষ্টিবিদ ও শিক্ষক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর