প্রতিনিধি, রাবি : ‘একটি স্বাস্থ্যকর বিশ্বের জন্য ফার্মেসি একত্রিত হয়েছে’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) পালিত হয়েছে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস। দিবসটি উপলক্ষে দিন ব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগ।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বিজ্ঞান ভবনের সামনে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। এসময় এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হোন তারা।
এসময় ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আজিজ আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে, সিন্ডিকেট সদস্য ও জোহা হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক একরামুল ইসলাম।
সমাবেশে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ পারভীনের সঞ্চালনায় বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবসের তাৎপর্য, গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতাকে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ফার্মাসিস্টরা বাংলাদেশে ঔষধ শিল্প একটা বড় ভুমিকা পালন করছেন। একটা নিদিষ্ট সময়ের পর আমরা ঔষুধের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। ঔষধ আমাদের প্রাণ রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করে। ফার্মাসিস্টরা শুধু ঔষুধ উৎপাদন ও বিপণন করেন না ঔষুধের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক পরিকল্পনা করে থাকেন। ফার্মাসিস্টরা রোগের কারণকে সামনে রেখেই ঔষুধ উৎপাদন করেন। তবে আমি লক্ষ করছি আমাদের বাংলাদেশের ডাক্তার ও ফার্মাসিস্টদের মধ্যে একটা ফারাক রয়ে গেছে। প্রত্যেক হসপিটালে একজন ডাক্তারের পাশাপাশি একজন ফার্মাসিস্ট রাখা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, দেশের শিক্ষার্থীদের উন্নত গবেষণায় এগিয়ে আসতে হবে ফার্মেসি বিষয়ে জানার কোনো বিকল্প নেই। নতুন উদ্ভাবন দিয়ে ফার্মাসিস্টদের অর্জনকে সমৃদ্ধ করতে হবে। এসময় মেডিসিন সম্পর্কে সকলকে সচেতন করার বিভিন্ন পরামর্শ দেন এ উপাচার্য।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি এসোসিয়েশন (রুপা) ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন বলেন, ওষুধের কার্যকরি ব্যবহার সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ এখনো এতটা সচেতন না। এ সম্পর্কে ভালো জানেন একজন ফার্মাসিস্ট। ডাক্তার ও নার্সের পাশাপাশি প্রত্যেক মেডিকেলে একজন অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্ট থাকা জরুরি। ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ঔষুধের ব্যবহার শুধু একজন ফার্মাসিস্ট ভালো জানেন এবং সেটা রোগীর কাছে সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। প্রত্যেক গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টকে বাংলাদেশের মেডিকেল গুলোতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর আহবান জানান এ অধ্যাপক।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে এদিন বিভাগের সামনে একটি মডেল মেডিসিন শপে ফ্রি স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেন ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেখানে ফ্রিতে রক্তের গ্রুপ, রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ঔষধ সম্পর্কে ধারণা দেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় ফার্মেসি পেশার প্রতি উদ্ভুদ্ধ করার জন্য ফার্মা অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি ও বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, ফার্মেসি পেশায় কর্মরতদের উৎসাহ প্রদান এবং এ পেশা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ২০১০ সাল থেকে সারাবিশ্বে এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে এ দিবস। সাধারণ মানুষকে এ মহান পেশা সম্পর্কে জানাতে এবং এ পেশার মানকে উচ্চ মর্জাদার আসনে আসীন রাখতে সারাবিশ্বে এই দিবস পালিত হয়।