শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাশিয়ার সাইবেরিয়ায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খনি দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২ তে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার লিজতিজনায়া খনির বায়ুচলাচল খাদের কয়লা গুঁড়োতে আগুন ধরলে দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়; আগুনের কারণে খনিটির ভেতর ধোঁয়ায় ভরে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে ১১ শ্রমিকের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার ৫২ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। খবর: রয়টার্স।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খনির ভেতরে আটকা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে ব্যর্থ অভিযানের পর মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ে। মৃতদের মধ্যে কয়েক উদ্ধারকর্মীও আছেন বলে জানানো হয়।
মস্কো থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার পূর্বে কেমোরোভা অঞ্চলে অবস্থিত কয়লা খনিটিতে কর্মরত ২৮৫ জনের বেশিরভাগই বৃহস্পতিবার ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ার সময়ই খনির বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। এদের ৪৯ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়; তাদের মধ্যে কয়েকজন ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় ভুগছেন এবং চারজনের অবস্থা গুরুতর বলে কর্তৃপক্ষ সে সময় জানিয়েছিল।
খনির ভেতর আটকা পড়া কয়েক ডজন শ্রমিককে উদ্ধারে অভিযান শুরু হলেও খনিটিতে বিপজ্জনক উচ্চ মাত্রার মিথেন শনাক্তের পর বিস্ফোরণের শঙ্কা থেকে অভিযান স্থগিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে নাম না জানানো একাধিক কর্মকর্তা রুশ সংবাদ সংস্থাগুলোকে বলেন, জীবিত কাউকে পাওয়ার আশা আর নেই এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ৫০ পেরিয়ে গেছে। মৃতদের মধ্যে ছয় উদ্ধারকর্মী আছে বলেও জানান তারা। এ ঘটনায় খনিটির পরিচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
লিজতিজনায়া খনিতে দুর্ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০০৪ সালেও সেখানে মিথেন গ্যাস বিস্ফোরণে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রাশিয়ায় মাঝেমধ্যেই খনি দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। তবে ২০১৬ সালে কর্তৃপক্ষ দেশটির ৫৮টি কয়লা খনির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে যে ৩৪ শতাংশ খনিকে ‘সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ’ অভিহিত করেছিল, তার মধ্যে লিজতিজনায়া ছিল না বলে জানিয়েছে রাশিয়ার গণমাধ্যমগুলো।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি আশা রাখেন যে যতটা সম্ভব মানুষকে বাঁচাতে সক্ষম হবেন। এতগুলো মানুষের প্রাণহানি ঘটনাকে, একটি বড় ট্র্যাজেডি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।