রাশিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পদ জব্দ বেড়েছে

শেয়ার বিজ ডেস্করাশিয়ায় থাকা ফিনল্যান্ডের জ্বালানি সংস্থা ফোর্টাম ও ইউনিপারের সব সম্পদ জব্দ করেছে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর জবাবে রাশিয়া ওই দেশগুলোর অনেক প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ করে, যা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে। খবর: রয়টার্স।

১৪ মাসের বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সম্মুখ সমরে ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ ছাড়াও পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার চলছে অদৃশ্য লড়াই। এ পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার দুটি বিদেশি সংস্থার সম্পদ দখলের ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।

এতে নতুন করে দুশ্চিন্তা বেড়েছে, কেননা প্রয়োজনে মস্কো অন্যান্য কোম্পানির বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

মঙ্গলবার দুটি বিদেশি জ্বালানি সংস্থার রাশিয়াস্থ সম্পদের ওপর অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন পুতিন। অন্যান্য কোম্পানির বিরুদ্ধেও একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে মস্কো।

ফোর্টাম জানিয়েছে, এ বিষয়ে ‘তদন্ত’ করবে তারা এবং ইউনিপার ও জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

পুতিনের স্বাক্ষরিত ডিক্রি অনুযায়ী, মস্কো এরই মধ্যে ইউনিপার এসই’র রাশিয়ান বিভাগ এবং ফিনল্যান্ডের ফোর্টাম ওইজের সম্পদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। মূলত বিদেশে রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করা হলে, সেটির প্রতিশোধের সম্ভাব্য রূপরেখা ঠিক কী হবে, তা এ ডিক্রিতে দেখা যাচ্ছে।

ডিক্রিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যদের কাছ থেকে অবন্ধুসুলভ ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানাতে রাশিয়াকে জরুরিভাবে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। সম্পদের ওপর অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য বিদেশি ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার রাশিয়ার ফেডারেল সরকারি সম্পত্তি সংস্থা রোসিমুশচেস্টভোর অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে বলে ডিক্রিতে বলা হয়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেছিলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির খরচ মস্কোর বহন করা উচিত। যদিও রাশিয়ার প্রধান প্রধান হিমায়িত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য উল্লেখযোগ্য আইনি বাধা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য মস্কোর বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার অধীনে জব্দ করা রুশ সম্পদ ব্যবহার করার কথা চিন্তা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

এর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক ‘ব্যাংক ভিটিবি পিএও’র সিইও গত সোমবার বলেন, রাশিয়ার উচিত ফোর্টামের মতো বিদেশি সংস্থাগুলোর সম্পদ গ্রহণ এবং পরিচালনার বিষয়টি বিবেচনা করা। এ ছাড়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পর সেগুলো ফেরত দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইউনিপার এসই ও ফিনল্যান্ডের ফোর্টাম ওইজের পর আরও বিদেশি সংস্থা অস্থায়ীভাবে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে তাদের সম্পদ দেখতে পারে বলে জানিয়েছে রোসিমুশচেস্টভো। এসব সম্পদ রুশ অর্থনীতির গুরুত্ব অনুসারে পরিচালিত হওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করবে সংস্থাটি।

সংস্থাটির উদ্ধৃতি দিয়ে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, পুতিনের স্বাক্ষরিত এ ডিক্রিটি মালিকানার সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করবে না এবং মালিকদের তাদের সম্পদ থেকে বঞ্চিতও করবে না। তবে সম্পদের বাহ্যিক ব্যবস্থাপনা অস্থায়ী এবং এর অর্থ হলোÑমূল মালিকের এখন আর ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নেই।

ইউনিপ্রোর ৮৩ দশমিক ৭৩ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ ইউপারের, যার অধীন পাঁচটি পাওয়ার প্লান্ট রয়েছে। এসব প্লান্ট থেকে রাশিয়ায় ১১ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত প্রায় চার হাজার ৩০০ কর্মী।

অপরদিকে ফোর্টামের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক ফিনল্যান্ডের। দেশটি চলতি মাসের শুরুতে সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগ দিয়েছে, যাকে বিপজ্জনক ভুল বলে আখ্যা দিয়েছে রাশিয়া। ডিক্রি প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এতে রাশিয়ায় থাকা তাদের সম্পদ ও প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রভাব পড়বে না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০