শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাশিয়ার সঙ্গে করা পরমাণবিক অস্ত্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শুক্রবার জানিয়েছেন, ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্স (আইএনএফ) চুক্তি লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া। এ কারণেই তারা বেরিয়ে আসতে চাইছেন। খবর: বিবিসি।
আইএনএফ চুক্তি অনুযায়ী স্থল থেকে উৎক্ষেপিত মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত আনা সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু ট্রাম্পের দাবি, ওই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া। রাশিয়াকে এমন অস্ত্র আর ব্যবহার করতে দেবে না যুক্তরাষ্ট্র, যার অনুমতি তাদের নেই।
ট্রাম্প বলেন, আমি জানি না প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কেন এটা নিয়ে আলোচনা করেননি বা সরে আসেননি। রাশিয়া অনেক দিন ধরেই এ চুক্তির লঙ্ঘন করে আসছে।
২০১৪ সালে অবশ্য ওবামা একবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে আইএনএফ চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, নোভাটের-৯এম৭২৯ নামে মধ্যপাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি তৈরি করেছে রাশিয়া। এর মাধ্যমে খুব সহজেই ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর আক্রমণ চালাতে পারবে রাশিয়া।
তবে রাশিয়া এ অস্ত্র নিয়ে তেমন কোনো মন্তব্য করেনি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় রাশিয়ার এ অস্ত্র অনেক সস্তা। শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সামরিক আগ্রাসন থামাতেই যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের ওই চুক্তি থেকে বের করে আনতে চাইছে।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন এসএস-২০ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। মার্কিন মিত্ররা তখন যুক্তরাষ্ট্রের পারসিং ও ক্রুজ মিসাইল নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। এ ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়। পরে এ আইএনএফ চুক্তির মাধ্যমেই পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনলেও প্রেসিডেন্ট ওবামা কখনই এ চুক্তি থেকে সরে আসতে চাননি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুরু করলে আবারও বিশ্বে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলেছে, ‘বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি হওয়ার বাসনায় এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার স্বপ্নে তাড়িত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচলিত বাহিনীর বিপরীতে রাশিয়া এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রকেই তুলনামূলক সস্তা বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে।
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মস্কো সফরের কথা রয়েছে। ওই সময় মস্কোর সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কথা রুশ কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাশিয়ার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বাতিল করছে যুক্তরাষ্ট্র
