শেয়ার বিজ ডেস্ক : দুই বছর আগের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের দায়ে রাশিয়ার ১৩ নাগরিককে অভিযুক্ত করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। এদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্থিক জালিয়াতি এবং পাঁচজনের বিরুদ্ধে অন্যের পরিচয় ব্যবহারেরও অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর বিবিসি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা রবার্ট মুলার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ৩৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে সেন্ট পিটার্সবুর্গভিত্তিক একটি ইন্টারনেট গবেষণা সংস্থাসহ রাশিয়ার তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলো ‘মার্কিন রাজনীতিতে বিভেদ তৈরির লক্ষ্যে’ কাজ করছিল।
এফবিআই বলছে, ২০১৪ সালের মে থেকে ‘প্রজেক্ট লাখতা’ নামে মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের কাজ শুরু করে অভিযুক্তরা। তারা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে মার্কিন নাগরিক সেজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রচার চালায়। পরিচয় পাল্টে তারা আর্থিক লেনদেন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, যেন সাধারণ মার্কিনিরা তাদের ভিনদেশি না ভাবে।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠার পর এফবিআইয়ের তদন্তে এটাকেই সর্বোচ্চ অগ্রগতি বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মার্কিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টাইন বলেন, অভিযুক্তরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রার্থীদের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ ছড়িয়ে দিতে ‘তথ্য যুদ্ধ’ শুরু করেছিল।
অভিযোগের বিষয়ে গত শুক্রবার সকালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে বলেও হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এক টুইটে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টি ‘কার্যত স্বীকার’ করে নিলেও এর সঙ্গে তার বা রিপাবলিকান শিবিরের কোনো ধরনের সংযোগ ছিল না বলেও ফের দাবি করেন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কোর হস্তক্ষেপ বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দাবিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখার কথা বলে আসছিলেন ট্রাম্প। এ নিয়ে কংগ্রেস ও বিচার বিভাগের তদন্তকেও বারবার একহাত নিয়েছিলেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও অন্যান্য কর্মকর্তারাও সবসময়ই মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। ১৩ রুশ নাগরিক ও তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মার্কিন নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগকে ‘হাস্যকর ও ভিত্তিহীন’ অ্যাখ্যা দিয়েছে মস্কো। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ১৩ ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে? নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর শত কোটি ডলার বাজেটের বিপরীতে মাত্র ১৩? গোয়েন্দা ও পাল্টা গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে এবং প্রযুক্তির এমন উন্নয়নের মধ্যে? মার্কিনিদের এই অভিযোগ অবশ্যই ভিত্তিহীন।
অভিযোগপত্রে নাম থাকাদের একজন প্রভাবশালী রুশ ব্যবসায়ী ইয়েভগেনি প্রিগোজিনও মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমেরিকানরা খুব চিত্তাকর্ষক। তারা তাই দেখে, যা তারা দেখতে চায়। তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ আছে। তালিকায় নাম দেখে আমি খুব একটা চিন্তিত নই। তারা যদি শয়তানকে দেখতে চায়, দেখুক।