রাশিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় বেলজিয়াম

ক্রীড়া ডেস্ক: বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের স্বপ্ন মিলে গেছে আগেই। তারপরও ইংল্যান্ড-বেলজিয়ামের সামনে সুযোগ ছিল রাশিয়া থেকে অন্তত তৃতীয় হয়ে দেশে ফেরা। গতিময় ফুটবলে শেষ পর্যন্ত সেটা করতে পেরেছে বেলজিয়াম। ২-০ গোলে ১৯৬৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে হাসিমুখেই বাড়ি ফিরছে দেশটির সোনালি প্রজšে§র ফুটবলাররা।
গতকাল সেন্ট পিটার্সবার্গে তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচের শুরুতেই থমাস মুনিয়ের গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে ইডেন হ্যাজার্ড বাড়ান ব্যবধান। শেষ পর্যন্ত তাদের দুজনের নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় দলটি। একই সঙ্গে রাশিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করল দলটি। এর আগে ১৯৮৬ সালে বেলজিয়ামকে স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ইতালি। অন্যদিকে ১৯৯০ সালের মতো এবারও বিশ্বকাপে চতুর্থ দল হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো ইংলিশদের।
তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। বলতে গেলে শুধু নিয়মরক্ষার লড়াই। তাতে হারজিত আসলে কোনো ব্যাপারই নয়। তারপরও দেশের টানে গতকাল শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম মাতিয়ে রাখেন ইংল্যান্ড-বেলজিয়ামের খেলোয়াড়রা। তবে এমন লড়াইয়ে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই ইংল্যান্ডের জালে বল জড়িয়ে আনন্দে মাতেন থমাস মুনিরে। মাঝমাঠ থেকে রোমেলো লুকাকুর লম্বা করে বাড়ানো বল ফিল জোনসকে বিট করে পেয়ে যান নাসের চাতলি। বাম প্রান্ত দিয়ে দুর্দান্ত ক্রস দেন ডি-বক্সে। এক গজ দূর থেকে দুজন ইংলিশ ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বসে পড়ে বলে পা ছুঁয়ে জালে জড়িয়ে দেন। এ নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের দশম খেলোয়াড় হিসেবে গোল করলেন তিনি। বিশ্বকাপের এক আসরে কোনো দলের এটা যৌথ সর্বোচ্চ রেকর্ড। ১০ জন গোল করেছিলেন ১৯৮২ ও ২০০৬ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের খেলোয়াড়রা। চতুর্থ মিনিটে গোলটা বিশ্বকাপ ইতিহাসে আবার বেলজিয়ামের দ্রুততম। তেমনি ইংল্যান্ডও বিশ্বকাপে গোল হজম করে দ্রুত। কিছুক্ষণ পরই লিড বাড়ানো সুযোগ পেয়েছিলেন লুকাকু। কিন্তু কর্নার থেকে এডেন হ্যাজার্ডের বাড়ানো বলে ঠিকমতো পা ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। ১৩তম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনের ভুলে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারেনি রবার্তো মার্তিনেজের দল।
১৫তম মিনিটে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন লফটাস চেক। কিন্তু কাইরান ট্রিপায়ারের ক্রসে ঠিকমতো হেড করতে পারেননি তিনি। এর ৫ মিনিট পর লফটাস চেকের দারুণ ফুটওয়ার্ক থেকে হেড করতে ব্যর্থ হন হ্যারি মাগুইয়ের। ২৩তম মিনিটে বেলজিয়াম গোলরক্ষককে অনেকটা একা পেয়েও হ্যারি কেন পারেননি লক্ষ্যে বল জড়াতে। এরপর অনেকটা এলোমেলোভাবে চলতে থাকে ম্যাচ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বেলজিয়ান ডিফেন্সের পরীক্ষা নেন লেফটাস চেক। কিন্তু কেভিন ডি ব্রুইন ও ভিনসেন্ট কোম্পানির বাধা অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ীদের ফ্রিকিক থেকে সমতায় ফেরার আশা জাগিয়েছিলেন ট্রিপায়ার। কিন্তু তার নেওয়া শটে ঠিকমতো জন স্টোনস হেড নিতে পারেননি। তাতে কিছুটা হলেও হতাশ হয় দলটি।
ম্যাচের ৭০তম মিনিটে নিশ্চিত গোলবঞ্চিত হয় ইংল্যান্ড। এরিক ডায়ার ও মার্কাস র‌্যাশফোর্ড ওয়ান টু ওয়ান পাসে বেলজিয়ান গোলরক্ষক এরিক কাউরিয়াসকে পরাস্ত করেছিলেন। বলও জড়িয়ে যাচ্ছিল জালের মধ্যে। কিন্তু ডিফেন্ডার টবে আন্ডারওয়ার্ড একবারে দাগের কাছ থেকে শুয়ে পড়ে বাম পায়ের শটে বল বিপদমুক্ত করেন। এর কিছুক্ষণ পরই উল্টো নিজেরাই গোল খেতে বসেছিল ইংলিশরা। কিন্তু মুনিয়ের দুর্দান্ত শট এক হাত দিয়ে কোনোরকমে সেভ করেন পিকফোর্ড। তবে খুব একটা লাভ হয়নি। দুই মিনিটের ব্যবধানে ঠিকই প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইডেন হ্যাজার্ড। মাঝমাঠ থেকে ডি ব্রুইন দ্রুত গতিতে বল নিয়ে বক্সের বাম প্রান্তে দেন হ্যাজার্ডকে। দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বেশ সহজেই গোল করেন বেলজিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড। তাতেই রাশিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়াটা নিশ্চিত হয়ে যায় দলটির।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০