নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় বঙ্গভবনে যান সাবেক ফার্স্ট লেডি রওশন। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টার বৈঠকে তিনি রাষ্ট্রপতির শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করতে সবার সঙ্গে আলোচনা করা যায় কি না, রাষ্ট্রপতিকে সে অনুরোধ করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা। এছাড়া আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ দিন মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ হওয়ায় জটিলতা এড়াতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে তফসিল পরিবর্তন করা যায় কি না, সে অনুরোধ করেছেন।’
রাঙ্গা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন।
রওশন এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি এরশাদ সাদ, অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান ও কাজী মামুনুর রশিদও উপস্থিত ছিলেন সাক্ষাতের সময়।
বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে বিরোধীদলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির শারীরিক খোঁজখবর নিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে সবার সঙ্গে আলোচনা করার বিষয়ে অনুরোধ করেছেন তিনি।’
মুখপাত্র জানান, ৩০ নভেম্বর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন ও মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন বিবেচনায় নিয়ে পুনঃতফসিল করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর।
রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। এরপর ভোট হবে ৭ জানুয়ারি।
তফসিল ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে রয়েছে।
গত ১৬ নভেম্বরে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের আহŸান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে সব দলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বদ্বিতাকে সর্বদা স্বাগত জানাবে। পারস্পরিক প্রতিহিংসা, অবিশ্বাস ও অনাস্থা পরিহার করে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা ও সমাধান অসাধ্য নয়।’
সংলাপের বার্তা দেয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকেও। কিন্তু আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কোনো পক্ষই তাতে সাড়া দেয়নি।