নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রায়ত্ত ও বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়তে অর্ধযুগ আগে উদ্যোগ নেওয়া হলেও এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। পুঁজিবাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার অফলোড এবং এ বিষয়ে কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ অবস্থান নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আগামী ২৬ জুলাই অর্থমন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ জুলাই বুধবার সকাল ১১টায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশসহ (আইসিবি) সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সরকারি কোম্পানিসহ বাংলাদেশে ব্যবসারত বেসরকারি ভালো কোম্পানিগুলোকে কীভাবে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বৈঠকটি গত ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
জানা গেছে, দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে দেশের শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বিদেশিরাও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। ফলে বাজারে এ ধরনের চাহিদা তৈরি হয়েছে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাজার মন্দা থাকায় সেখান থেকে সরে আসে সরকার। তবে এখন আবারও শেয়ার সরবরাহের সময় এসেছে বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বিভিন্ন কোম্পানিকে শেয়ার অফলোড সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির বিষয়ে তারা প্রস্তুত রয়েছে কিনা কিংবা কোন পর্যায়ে আছে কোম্পানিগুলোকে তাও জানাতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি ৩৪ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে ওই সময় সে উদ্যোগ বেশিদূর এগোয়নি। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে বাজারে ভালো শেয়ারের ভয়াবহ সংকট দেখা দেয়। এরপর সংকট কাটাতে সরকারি কোম্পানিকে বাজারে আনার উদ্যোগ শুরু হয়। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয় এক বৈঠকে সরকারি কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি শেয়ার পাবলিকের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সময় কোম্পানিগুলোকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার ছাড়তে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়ে কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু সে নির্দেশনার প্রতিফলন দেখা যায়নি।
এদিকে বহুজাতিক কোম্পানির বিষয়ে বিএসইসি ইতোমধ্যে তাদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। তাদের মতে যেসব বিদেশি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় তাদের নগদ লভ্যাংশের ওপর বর্ধিত করহার আরোপ করা যেতে পারে। বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য আরজেএসসি থেকে নিবন্ধন সনদ নিতে হয়। এ নিবন্ধনের সময় শর্তারোপ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তি করার শর্তারোপ করা যেতে পারে।
Add Comment