নিজস্ব প্রতিবেদক : মূলধন ঘাটতি পূরণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য চলতি অর্থবছরে বরাদ্দকৃত অর্থ এপ্রিলেই ছাড় করবে সরকার। তবে কোন ব্যাংককে কী পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। একইসঙ্গে মূলধন ঘাটতি পূরণে ব্যাংকগুলোর বন্ড ছাড়ার বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে ‘রাষ্ট্রমালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ও দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত’ শীর্ষক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। বৈঠকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
যেসব ব্যাংকের বিষয়ে বৈঠক হয়েছে সেগুলো হচ্ছে: সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে এ পাঁচটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। মূলধন ঘাটতির পূরণে এ সাতটি প্রতিষ্ঠানকে সরকার এর আগে বিভিন্ন সময়ে নগদ আট হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এবার ব্যাংকগুলো চার হাজার ১০০ কোটি টাকা দাবি করছে। তাদের এবারের দাবি নগদ টাকা নয়, বন্ড।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। ক্যাপিটাল শর্টফল এটার একটা। ব্যাংকগুলোর বন্ড ইস্যুর ক্ষমতা আছে কি না, সেই ক্ষমতা প্রয়োগে তারা সমর্থ কি না ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ আলোচনা চলবে। তবে আমরা বাজেটে রেখেছি, ক্যাপিটাল শর্টফল কিছুটা দেব। কে পাচ্ছেন, কে কত পাচ্ছেন সেটা সিদ্ধান্ত হলে জানাব। আমাদের বাজেটারি ক্যাপাসিটি যা আছে, সেটা আগামী মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করব।’
এক প্রশ্নের জবাবে ‘ক্যাপিটাল শর্টফল আগামী মাসের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে’ বলে জানান তিনি।
সার্বিকভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটি সরকারি ব্যাংক দুর্বল ব্যাংক। প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু ঘাটতি আছে। তবে বেসিক ব্যাংকের সমস্যাগুলো অন্য সবার চেয়ে একেবারে ভিন্ন। তাদের সমস্যা এমন যে, একে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে সমমানে বিচার করা যাবে না। এটা একটু বেশি নার্সিং করতে হবে।’
‘বেসিক ব্যাংককে আলোচনায় রাখলে অন্য সব আলোচনা হারিয়ে যায়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বেসিক ব্যাংক থাকলে আর কিছু আলোচনা করা যায় না। সবাই এটা নিয়ে কথা বলে। সবসময় এখানে চলে যায়, কার্যকর কিছু হয় না।’
পরবর্তী বৈঠকে এ ব্যাংকটিকে বাইরে রাখার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার পর কিছু কাজ হয়েছে। কারা টাকা-পয়সা নিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করা গেছে। এটা একটা মহা মুশকিলের কাজ ছিল।’
বেসিক ব্যাংকের কেলেঙ্কারির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দুদকের কাছে কাগজপত্র আছে, তারা যেভাবে ব্যবস্থা নেবে, সেভাবেই হবে।’
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণে আগামী মাসেই অর্থছাড়

Add Comment