নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে প্রয়োজনে ফেসবুক ও ইন্টারনেট বন্ধ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। গতকাল রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে আয়োজিত ‘আইটিইউ বিটিআরসি এশিয়া-প্যাসিফিক রেগুলেটরস রাউন্ডটেবিল-২০১৮’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, সরকারের কাছে সবার আগে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা, কোনো পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় বা জনগণের নিরাপত্তা বিঘিœত হলে ইন্টারনেট বন্ধের মতো পদক্ষেপও সরকার নিতে পারে। আমাকে বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রতম সেক্রিফাইস করতেই হবে। এটি খুব সঙ্গত কারণেই করতে হবে। বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্রতম স্বার্থ ত্যাগের মানসিকতা রাখতে হবে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মৃত্যুর গুজব ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ফেসবুকে আমাদের ফিল্টারিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফেসবুক তার নিজের আমেরিকান আইন অনুযায়ী কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে।’
কোনো কন্টেন্ট বাদ দেওয়া বা অন্য বিষয়ে ফেসবুককে শুধু অনুরোধ করা যায় জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমরা কেবল ফেসবুককে অনুরোধ করতে পারি। ফেসবুক তার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী নিজেদের কাজগুলো করে থাকে। এখন ফেসবুকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকলেও সব কথা শোনে না।’
এ কারণে টেলিকম বিভাগের মাধ্যমে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পটি ডিজিটাল নিরাপত্তাবিষয়ক। আমরা প্রত্যাশা করি এ প্রকল্প যদি শেষ করতে পারি, তখন সম্পূর্ণভাবে আমরা আমাদের কন্টেন্ট ফিল্টারিং অথবা যে ধরনের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা দরকার সেগুলো করতে সক্ষম হবো।’
কবে নাগাদ এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এটি টেবিলে ছিল, এই প্রকল্পে অনেকে যুক্ত আছে সবাইকে মিলিয়ে এটি করতে হবে।’
আগামী নির্বাচনের সময় বা কোনো ঘটনা ঘটলে আবারও ইন্টারনেট বন্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কি না এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘সবার আগে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা এবং অন্য বিষয়গুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। আবার যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যে পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে কিংবা জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, তখন প্রযুক্তির দিকে তাকিয়ে থাকা এটা কোনো অবস্থাতেই নয়। আমাকে বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রতর সেক্রিফাইস করতেই হবে।’
আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) ও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিকম সংস্থার (এপিটি) উদ্যোগে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসির যৌথ আয়োজনে টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আয়োজিত এ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার এবং বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বক্তব্য দেন।