শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাষ্ট্র হিসেবে লেবানন ও এর কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে জানান দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী সাদেহ আল শামি। খবর: মিডল ইস্ট মনিটর।
আল জাদিদ চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার জেরে রাষ্ট্র হিসেবে দেউলিয়া হয়ে গেছে লেবানন। তিনি বলেন, ব্যাংক ডু লিবানের (লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) মতো আমাদের দেশও দেউলিয়া হয়ে গেছে। বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে চলছি আমরা এবং চেষ্টা করে যাচ্ছি জনগণের ভোগান্তি যেন কিছুটা হলেও কমানো যায়। তবে ক্ষয়ক্ষতি অস্বীকার করার কিছু নেই। পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। আমি আশা করি শিগগির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রিয়াদ সালামেহ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেউলিয়া হওয়া নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়। টেকসই উন্নয়ন ব্যাহত হলেও আমরা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে সরকার ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
লেবাননে দীর্ঘদিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধ দেশটির অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে গৃহযুদ্ধের অবসান হলেও অর্থনৈতিক পতন কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি। গৃহযুদ্ধে বিবদমান পক্ষগুলোর নেতারা রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। এরপর তারা নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নামেন। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের তৎপরতা চোখে পড়ে। অর্থনীতিতে উল্লম্ফনও দেখা দেয়। কিন্তু আঁকড়ে ধরে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা।
এরপর কভিড-১৯ মহামারি ও ২০২০ সালে বৈরুত বন্দরে ব্যাপক বিস্ফোরণে এ সংকট আরও ঘনীভূত হয়। ওই বিস্ফোরণে ২১৬ জন নিহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ এবং রাজধানীর একাংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। এসব কারণে দেশটির বর্তমান অবস্থাকে মধ্য ১৮০০ শতকের পর অন্যতম বাজে অর্থনৈতিক ও আর্থিক সংকট বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটেছে লেবাননের মুদ্রা লেবানিজ পাউন্ডের।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে লেবাননের ৮২ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। বেকার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ।