Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 10:15 pm

রিজার্ভের অর্থ চুরি: তদন্ত প্রতিবেদন চায় ফিলিপাইন সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে সহায়তা করবে ফিলিপাইন সরকার। তবে এ ঘটনায় বাংলাদেশ তদন্ত করে যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তা চেয়েছে দেশটি। গতকাল রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ফিলিপাইনের অর্থমন্ত্রী কার্লোস ডমিনগেজ এক বিবৃতিতে বলেন, ঢাকাকে তার তদন্তের ফল বিনিময়ের জন্য জোরালো সুপারিশ করেছে ম্যানিলা। তবে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে যা যা করা সম্ভব তার সবই ফিলিপাইন সরকার করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

কিছুদিন আগেও রিজার্ভ চুরির ১৫ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলার ফেরত দিয়েছে ফিলিপাইন সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক তখনই আশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ চুরির পুরো অর্থটাই ফেরত পারে। কারণ তখন পর্যন্ত আন্তরিকভাবেই সহযোগিতা করে আসছিল ফিলিপাইন সরকার।

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ফিলিপাইন সফর করে আসে। সফরে দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক থাকলেও তা বাতিল করেন তিনি। সে সময়ই হঠাৎ করে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক বাংলাদেশকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেবে না বলে উল্লেখ করে। তারা তখন জানায়, যে রিজার্ভ চুরির বিষয়ে বাংলাদেশ তাদের তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করে তথ্য গোপন করছে।

এরপর দেশে ফিরে আইনমন্ত্রী আবার ব্যাংকটির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবেই বলে জোর বক্তব্য দেন। এরপরই ফিলিপাইনের অর্থমন্ত্রী এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা জানালেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের রিজার্ভের আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পাঠানো হয়। সে সময় ফেড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে স্টপ পেমেন্ট দিয়ে বার্তা পাঠানো হলেও ব্যাংকটি এসব অর্থ ছাড় করে, যা পরে দেশটির বিভিন্ন ক্যাসিনোতে চলে যায়। একটি ক্যাসিনো মালিকের কাছ থেকে উদ্ধার করা ১৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার জব্দ করার পর তা বাংলাদেশকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিনিধিদলের উদ্দেশে ডমিনগেজ বলেন, আমাদের পক্ষে সম্ভব জোরালো সর্বোচ্চ উপায়ে আইনগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, এর আগে চুরি যাওয়া এ অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া টেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় রিজাল ব্যাংককে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০ কোটি ডলার জরিমানা করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এরপরও রিজাল ব্যাংক বলছে ঘটনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহেলা দায়ী। যে কারণে তারা বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলেন জানায়।

এদিকে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নেস্তর এসপেনিলা বলেছেন, তদন্ত এখনও শেষ না হওয়া প্রাথমিক হালনাগাদ তথ্য দেবে বলে বাংলাদেশের কাছে ম্যানিলা আশ্বাস পেয়েছে।