নিজস্ব প্রতিবেদক: বন, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিকল্পনায় পরামর্শকের স্বার্থ রক্ষা হলো কি না, সেটা দেখার কোনো প্রয়োজন নেই। এই পরিকল্পনা জাপান অথবা যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শকরা করছেন কি না, সেটিও দেখার প্রয়োজন নেই। আমাদের দেখতে হবে দেশের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কি না। দেশের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যই আমাদের সঠিক জ্বালানি চাহিদা নিরূপণ করতে হবে। পাশাপাশি বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থার কথাও আমাদের ভাবতে হবে।
গতকাল বুধবার তিন দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশের জ্বালানি সমৃদ্ধি, ২০৫০’ সম্মেলনের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনে সাবের হোসেন চৌধুরী এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে এ সম্মেলন শুরু হবে। বাংলাদেশ ক্লাইমেট পার্লামেন্টের উদ্যোগে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। এই আয়োজনে ১০টি-সহ আয়োজক রয়েছে।
সাবের হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির কারণে পৃথিবী অস্তিত্বসংকটে রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। টেকসই জ্বালানি উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নজর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের যে জ্বালানি চাহিদা, সেটি আমাদের সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে। এখন জ্বালানির কারণে আমাদের রিজার্ভের ওপর চাপ পড়ছে, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হলে বিকল্প জ্বালানি চিন্তা করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।
তথ্য মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, জ্বালানি পরিকল্পনায় দেশীয় স্বত্বাধিকার কীভাবে রক্ষা করা যায়, সেটি দেখতে হবে। জ্বালানি সমৃদ্ধির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত জ্বালানি দরকার। জ্বালানি নিরাপত্তা টেকসই করতে হলে বর্তমান অবস্থা থেকে শতভাগ বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থা কীভাবে দাঁড় করানো যায়, সেই আলোচনা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, ২০৪০ সালের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এই ব্যবস্থা দাঁড় করাতে হবে। বিদেশনির্ভরতা কীভাবে কমাব, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে কীভাবে বিকল্প জ্বালানিতে যাওয়া যায়, সে বিষয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
ক্লাইমেট পার্লামেন্টের সভাপতি তানভির শাকিল জয় বলেন, আমরা দেশে অন্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কিন্তু এর সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। সোলার হোম সিস্টেমে বাংলাদেশ অনন্য নজির স্থাপন করছে। আমরা সারা দেশে ছয় মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করেছি।
বিডব্লিউজিইডির মেম্বার সেক্রেটারি হাসান মেহেদি বলেন, কপ ২১-এ প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার হবে। আমরা সেই বিষয়টি তুলে এনে কী কী করা যায়, সেটি নিয়েই সম্মেলনে আলোচনা করব। সবাইকে নিয়ে সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি সুপারিশ আমরা সরকারকে দিতে চাই।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ নির্বাহী জাকির হোসেন খান বলেন, টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। এজন্য ফসিল ফুয়েল থেকে বের হয়ে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যেতে হবে।
সিপিআইয়ের প্রধান নির্বাহী সামসুদোহা বলেন, আমাদের একটা ইতিবাচক মনোভাব প্রয়োজন। এটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ফসিল ফুয়েল থেকে বের হয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নিয়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবার ইতিবাচক মনোভাব খুব জরুরি।
জিয়াউল হক মুক্তার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, আর্থ সোসাইটির মামুন মিয়া প্রমুখ।