নিজস্ব প্রতিবেদক : অবৈধভাবে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম গতকাল সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ২০ মে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করেন।
এদিন সাহেদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে বিচারক তা নাকচ করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন বলে জানান দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, বিচারক অভিযোগ পড়ে শোনালে সাহেদ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং ন্যায় বিচার চান।
দীর্ঘ কারাবাস ও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তার কয়েকজন আইনজীবী তার জামিন চান। অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে তারা বলেন, মামলার ঘটনা মিথ্যা। তার এতটা সম্পদ নেই, তিনি তথ্যও ফাঁকি দেননি।
অন্যদিকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে ও জামিনের বিরোধিতায় জাহাঙ্গীর আদালতকে বলেন, সাহেদ একজন হ্যাবিচুয়াল অফেন্ডার। তার আবেদন নাকচ করা হোক। সাহেদের আইনজীবীরা কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে না নিয়ে বিশেষ গাড়িতে আলাদাভাবে তাকে আদালতে নেয়ার আবেদন করলে বিচারক তাতেও সায় দেননি বলে জানান দুদকের আইনজীবী।
অভিযোগ গঠনের সময় সাহেদ এজলাসের কাঠগড়ায় ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে জানান পেশকার হারুন অর রশিদ।
গত বছরের ১ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী কমিশনের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় গত বছরের ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। তিন মাস না যেতেই করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেয়া, সরকারের কাছে বিল দেয়ার পর রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে রিজেন্টের বিরুদ্ধে।
এরপর গত বছর ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয় র্যাব। ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অনিয়মের নানা অভিযোগ তখন সামনে আসতে থাকে।
তদন্ত চলার মধ্যেই ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর সম্পদের হিসাব চেয়ে সাহেদকে নোটিস পাঠায় দুদক। ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে বলা হয়।
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তিনি সম্পদ বিবরণী জমা না দেয়ায় অতিরিক্ত আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। সাহেদ এরপরও তা জমা না দেয়ায় গত বছরের ১ জানুয়ারি মামলা করে দুদক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ৩৬টির বেশি মামলা করা হয়। ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনে করা মামলায় আদালত সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।