নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী করবর্ষে (২০২২-২৩) ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিল হয়েছে প্রায় ২৮ লাখ ৫১ হাজার; যা গত করবর্ষের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বেশি। আর রিটার্নের সঙ্গে কর আদায় হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৭৬ কোটি টাকা; যা গত করবর্ষের তুলনায় প্রায় ৭৯৫ কোটি টাকা বেশি। ১ জানুয়ারি ২০২২-২৩ করবর্ষের ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সময় শেষ হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক। তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনের রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর আবেদন করে। এরই প্রেক্ষিতে ৩০ নভেম্বরের পরিবর্তে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ এক মাস সময় বৃদ্ধি করা হয়। আয়কর দিবসের সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সময় বৃদ্ধির এ ঘোষণা দেন। ঘোষণা অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর রিটার্ন দাখিলের সময় শেষ হয়। তবে ৩০ শুক্রবার ও ৩১ ডিসেম্বর শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। সেজন্য ১ জানুয়ারি রোববার পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২-২৩ করবর্ষের ১ জুলাই থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ২৮ লাখ ৫১ হাজার রিটার্ন দাখিল হয়। রিটার্নের সঙ্গে কর আদায় হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৭৬ কোটি টাকা। রিটার্ন দাখিলের সময় বৃদ্ধির আবেদন জমা পড়েছে প্রায় আড়াই লাখ। তবে সময় বৃদ্ধির আবেদনের সঙ্গে যোগ করলে রিটার্ন সংখ্যা বাড়বে প্রায় ৮ লাখ। অপরদিকে, গত ২০২১-২২ করবর্ষে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের রিটার্ন দাখিল হয়েছে ২২ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৫টি। সে হিসেবে বিদায়ী করবর্ষে রিটার্ন দাখিল বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ। রিটার্ন দাখিলের হার ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর গত করবর্ষে রিটার্নের সঙ্গে কর আদায় হয়েছে ৩ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। সে হিসেবে বিদায়ী করবর্ষে কর আদায় বেড়েছে ৭৯৫ কোটি টাকা। কর আদায় প্রবৃদ্ধি ২৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
অপরদিকে, ২০১৬ সালে আয়কর অধ্যাদেশে পরিবর্তন এনে ৩০ নভেম্বর জাতীয় কর দিবসের পর রিটার্ন জমা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যদিও গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে এক মাস সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা, সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপের বিধান রয়েছে। ১২৪ ধারায় বলা আছে,করদাতা যদি কোনো কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করেন, আবার এজন্য অনুমোদনও না নেন, সেজন্য তার পূর্ববর্তী বছর প্রদেয় করের ১০ শতাংশ বা এক হাজার টাকার মধ্যে যেটি বড় অঙ্ক, ওই পরিমাণ অর্থ জরিমানা হবে। সেই সঙ্গে যত দিন দেরি হবে, প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা জরিমানা আদায়ের বিধান রয়েছে।