হামিদুর রহমান: দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। এতে বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন মার্কেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অফিস-আদালত। বিভিন্ন খাতে নানামুখী সংকটের মতোই চলছে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সেবা। যথাযথ রিচার্জ পয়েন্ট না থাকায় ভোগান্তি নিয়েই সময় পার করছেন মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, লকডাউনে হোম কোয়ারেন্টাইনে সময় পার করা ও বিশ্বব্যাপী খবরাখবরের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট। তবে বিভিন্ন এলাকায় রিচার্জ পয়েন্ট খোলা না থাকায় লোড করতে সমস্যা হচ্ছে। রিটেইলার না থাকায় অনেকের ভরসা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। তবে সব গ্রাহকের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট না থাকায় এ সুবিধার বাইরে রয়েছেন বেশিরভাগ গ্রাহক।
রাজধানীর বসুন্ধরার খন্দকার শামছুন্নাহার বলেন, ‘হোম কোয়ারেন্টাইটে রান্না, ঘর পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতেই সময় পার করতে হচ্ছে। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রিচার্জ পয়েন্ট বন্ধ থাকায় এ ক্ষেত্রে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
একই ধরনের কথা জানান ইস্কাটনের অধিবাসী নাজিম উদ্দিন। চাকরি করছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি জানান, সোশ্যাল মিডিয়া এখন শুধু আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগই শেষ নয়, বর্তমানে অফিসসহ সবকিছুই অনলাইনে সামলাতে হচ্ছে। আর এ সময়ে রিচার্জ পয়েন্টগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফোনে রিচার্জ করা না গেলে সব দিক থেকেই সমস্যায় পড়তে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশের এমন সংকট মুহূর্তে মানুষকে ঘরে বসেই সময় পার করতে হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখায় সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ এখন জরুরি প্রয়োজনে এ মাধ্যমটি বেশি ব্যবহার করছে। এ অবস্থায় মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সেবা আরও সাশ্রয়ী হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।
জানতে চাইলে এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফরহাদ এক হোয়াটস্অ্যাপ বার্তায় শেয়ার বিজকে বলেন, ‘অর্থনীতির অন্যান্য খাতের মতোই টেলিকম খাতও চলমান করোনাভাইরাসের কারণে কঠিন সময় অতিক্রম করছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রাহকের কথা বিবেচনা করে অপারেটররা ডেটা প্যাকের মূল্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করেছে বা ভলিউম দ্বিগুণ করেছে।
যার ফলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ডেটা ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ডেটা মূল্যের ভর্তুকির কারণে এর প্রতিফলন রাজস্বে পড়বে না। গত কিছুদিন ধরে ভয়েস কল ২০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। ফলে টেলিকম কোম্পানিগুলোর জন্য উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে মানুষ চলাচলের সীমাবদ্ধতার কারণে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ খুচরা চ্যানেল অকার্যকর (নন-ফাংশনাল) হয়ে গেছে। এই সংকটকালে টেলিকমকে জরুরি পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করা হলেও দেখা যাচ্ছে, সরকারি নির্দেশনাবলির ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঠিক ধারণা না থাকায় টেলিকমের খুচরা কর্মকাণ্ডগুলো, বিশেষত টপ-আপ বা রিচার্জ পরিষেবাগুলোর কর্মকাণ্ড বাধা আসছে। মোবাইলের স্থানীয় স্টোর ও অন্যান্য রিচার্জ আউটলেটগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পাওে, সে জন্য আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।