গত মঙ্গলবার বিএসইসির ৬৯৩তম কমিশন সভায় পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডগুলো লভ্যাংশ হিসেবে আর রি-ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট দিতে পারবে না। এখন থেকে ফান্ডগুলোকে নগদ লভ্যাংশই দিতে হবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। এছাড়া কল মানি রেট আগের চেয়ে কমিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে বাজার ইতিবাচক হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএমবিএ সাবেক সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ফোরকান উদ্দিন।
মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, গতকাল বিএসইসির ৬৯৩তম কমিশন সভায় পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর পরে আইপিও অনুমোদনে চার বছরের বেশি সময় লাগা কোম্পাানির ক্ষেত্রে এক বছর লক-ইন করা হয়েছে। উদ্যোক্তা পরিচালক ও ১০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারণকারীদের জন্য তিন বছর লক-ইন প্রযোজ্য হবে। অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে এক বছর ও বাকি অন্যসব শেয়ারে দুই বছর লক-ইন রাখা হবে। আর ফিক্সড প্রাইজ পদ্ধতিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে আনা হয়েছে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে এবং মিউচুয়াল ফান্ডগুলো লভ্যাংশ হিসেবে আর রি-ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট দিতে পারবে না। এখন থেকে ফান্ডগুলোকে নগদ লভ্যাংশই দিতে হবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। এছাড়া আরও অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবার কল মানি রেট আগের চেয়ে কমিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে বাজার ইতিবাচক হবে বলে মনে করি। আমরা মনে করি বাজার সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিলে পরের দিনই বাজার ভালো হবে আসলে বিষয়টি এ রকম নয়। কোনো সংস্কার হলে তার সুফল পেতে একটু সময় লাগবে। এখানে রেগুলেটর ইচ্ছা করলে বাজার বাড়াতে পারবে না আবার ইচ্ছা করলে কমাতেও পারবে না। এখানে বিনিয়োগকারীদের সচেতন হবে হবে।
ফোরকান উদ্দিন বলেন, গতকাল বিএসইসির ৬৯৩তম কমিশন সভায় যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলো বাজারে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কিন্তু আইপিও’র কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের জায়গায় কতটুকু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ আইপিওর মান নিয়ে বেশি অলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এখানে কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বলতে বোঝানো হচ্ছে, যারা বাজারে কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে মার্চেন্ট ব্যাংক, অডিটর, কোম্পানি ম্যানেজমেন্ট, আন্ডাররাইটার এবং ইস্যু ম্যানেজাররা। প্রশ্ন হচ্ছে, এ আইনের মাধ্যমে যদি ওইসব ব্যক্তিদের দায়িত্বশীল করা যায় সেটি ঠিক আছে কিন্তু এ আইনের মধ্যে সেটি নির্দিষ্টভাবে বলা নেই। বিশেষ করে ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায় পরিচালনা পর্ষদ। যদি পরিচালনা পর্ষদকে সঠিকভাবে দায়িত্বশীল করা যায় সেক্ষেত্রে এর সুফল হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে বাজেটের আকার বড় হচ্ছে এবং অর্থনীতি বড় হচ্ছে। আমরা এনবিআরের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হচ্ছি। প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ কর আদায়ের ক্ষেত্রে এনবিইআর জড়িত। এবার প্রস্তাবিত বাজেটে কর আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। কথা হচ্ছে, আমরা যে কর আদায় করব এখন পর্যন্ত ভালো একটি প্ল্যানিং সেল নেই এনবিআরের। এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে এনবিআরে উন্নয়ন ও রিসার্স কমিটি গঠন করা। কারন প্রতিনিয়ত করসংক্রান্ত বিষয় পরিবর্তন হচ্ছে।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ