ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে বাস সেবা চালু হতে যাচ্ছে। আগামী ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। শেয়ার বিজের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বুধবার এ রুটের অ্যাগ্রিমেন্ট ও প্রোটোকলের খসড়া অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়। আগামী সোমবার অনুষ্ঠেয় সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এটি অনুমোদনের কথা রয়েছে। ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে যশোরের বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে কলকাতা পৌঁছাবে এ রুটের বাস। মধ্যে খুলনায় থাকবে বাধ্যতামূলক স্টপেজ। সেখানে যাত্রীরা ওঠানামা করতে পারবেন। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনা করে সেবাটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চারটি রুটে বাস চলাচলের চুক্তি রয়েছে। ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচল শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। রুটটি জনপ্রিয়। অন্যদিকে যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় না রেখে ২০১৫ সালে চালু করা হয় কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিস। যাত্রী না পাওয়ায় মাসে একবার করে কিছুদিন এ রুটে বাস চালু রাখার পর বন্ধ হয়ে যায় সেটি। যাত্রীর অভাবে ঢাকা-আগরতলা বাস সেবাও এখন বন্ধ। ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে বাস সেবা চালু হওয়া নিয়ে বাস মালিকরা আশঙ্কা করছেন, এ রুটে আর্থিক ক্ষতি হবে তাদের। ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পৌঁছাতে অতিরিক্ত ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। এতে তিন-চার ঘণ্টা সময় বেশি লাগবে। ফলে খুলনা হয়ে যশোর পৌঁছাতে পৌঁছাতে ঢাকা-যশোর-কলকাতা রুটের বাস পৌঁছে যাবে কলকাতায়। ফলে এ রুটে ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত যাত্রী পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) আওতায় খুলনা-কলকাতা রুটে বাস সেবা চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভুটানের আপত্তিতে আটকে যায় সেটা। পরে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটটি চূড়ান্ত হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রাম-ঢাকা-কলকাতা রুটে বাস সেবা চালু নিয়েও আলোচনা চলছে।
লক্ষণীয়, প্রায় সব রুটের কেন্দ্রে রাখা হয়েছে ঢাকাকে। এক্ষেত্রে ভারতীয় বাস মালিকদের অসুবিধা না হলেও সমস্যা হতে পারে বাংলাদেশ অংশের মালিকদের। কেননা ঢাকা থেকে যাত্রীরা কলকাতা যেতে চাইলে সবচেয়ে ছোট রুটটিই বেছে নিতে আগ্রহী হবেন। খুলনা অঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার জন্য বাস সার্ভিস চালু করা হলে সেটি খুলনা-কলকাতাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। সেখানে ঢাকাকে যুক্ত করা যুক্তিসংগত নয় বলেই আমাদের ধারণা। যে কোনো রুটে বাস সেবা চালুর আগে যাত্রী চাহিদা নিরূপণও জরুরি। ভারত তার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগ সহজ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বিভিন্ন রুটের প্রস্তাব প্রায়ই করে থাকে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকেও নিজ স্বার্থের কথা মাথায় রাখতে হবে। আমরা আশা করব, দুই দেশের মধ্যে সে রুটগুলোতেই মানসম্মত বাসসেবা চালু হবেÑযেগুলো কাজে লাগবে উভয় দেশের যাত্রীদের।