রূপপুরের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সমঝোতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় জ্বালানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতির উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ও রাশিয়া একমত হয়েছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় জ্বালানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খসড়া চুক্তিতে দুই দেশ অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ দূতাবাস। গতকাল শনিবার দূতাবাসের এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। তবে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কীভাবে করা হবে বা খসড়া চুক্তিতে কী রয়েছে সে বিষয়ে বিবৃতিতে কিছুই বলা হয়নি।
এর আগে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঢাকায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নানা বিষয় নিয়ে কয়েক দফা আলোচনার পর বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল তেজস্ক্রিয় জ্বালানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে চুক্তি।
পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর চুক্তি হয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের। সে অনুযায়ী, ২৪০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হবে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা এক লাখ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। ৫০ বছর আয়ুর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাজের প্রাথমিক ফলাফল নিয়ে আগামী জুন বা জুলাইতে মস্কোতে জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে। এর একটি যৌথ প্রটোকল গৃহীত হবে।
প্রাথমিক চুক্তি অনুযায়ী, এ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়ার ফেরত নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও চূড়ান্ত চুক্তিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু উল্লেখ না থাকায় উদ্বেগ দেখা দেয়। তবে নির্দিষ্ট সময়ের পর উচ্চ তেজস্ক্রিয় এসব বর্জ্য চূড়ান্ত অপসারণের জন্য রাশিয়ায় ফেরত নিয়ে যাওয়া হবে বলে কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, নির্দিষ্ট সময়ের পর উচ্চ তেজস্ক্রিয় এসব বর্জ্য চূড়ান্ত অপসারণের জন্য রাশিয়া ফেরত নিয়ে যাবে।
এদিকে, দুদিনের আলোচনায় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় করপোরেশন রোসাটমের উপ-মহাপরিচালক নিকোলাই স্প্যাস্কি, রোসটেকনাদোরের ডেপুটি চেয়ারপারসন এলেক্সেই ফেরাপন্তভ ও ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাস্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ইগনাতভ অংশ নেন। বাংলাদেশের পক্ষে বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটি ও বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রথম ইউনিটটির কাজ চুক্তি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেষ করাকে প্রাধান্য দিয়েই আলোচনায় উভয় পক্ষ একমত হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। রুশ প্রতিনিধি দল রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণস্থল পরিদর্শন করে সেখানে একটি কার্যনির্বাহী বৈঠকে অংশ নেন। বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটির চেয়ারম্যান নাইয়ুম চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মনজুরুল হক ও জেএসসি ‘অ্যাটমস্ট্রয়েক্সপার্ট’ প্রধান ব্যবস্থাপকরাও এতে অংশ নেন।