Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 10:33 am

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর ফ্রেশার ভ্যাসেল (আরপিভি) বা পারমাণবিক চুল্লিপাত্র স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপনকাজের অনুমতি প্রদান করছি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।

এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব জিয়াউল হাসান, রূপপুর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর। আরও উপস্থিত ছিলেন ঈশ্বরদীর জনপ্রতিনিধি, পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কেন্দ্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম ও এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের কর্মকর্তারা।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের এই অঞ্চলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে এখানে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর একটি পশ্চিম পাকিস্তানে, একটি আমাদের দেশে। জমিও ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলো, আমাদের অঞ্চলে আর নির্মাণ করেনি পাকিস্তানি শাসকরা। বরং দুটিই তারা নিজ দেশে নিয়ে যায়। ফলে আমরা পূর্ববাংলার মানুষ বঞ্চিত হই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা দেশের টাকা দিয়ে সব গ্যাসফিল্ড ক্রয় করেন। ওই সময় আমাদের যখন দুরবস্থা, সে সময়ও তিনি ভোলেননি যে এই সম্পদ বাংলাদেশের মানুষের সম্পদ। আমাদের জ্বালানি ও খনিজসম্পদসহ সব সম্পদ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য নিশ্চিত করে দিয়ে যান। রাষ্ট্রের মালিকানা নিশ্চিত করেন। সংবিধানের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ দেয়া ও জীবনমান উন্নত করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেন। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেও আলোচনাও করেছেন। কিন্তু তিনি তা শেষ করে যেতে পারেননি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্লান্ট আমরা প্রণয়ন করি। এ বিষয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী সাদেক সাহেবের নেতৃত্বে আমি একটি কমিটিও তৈরি করে দিয়েছিলাম। কমিটি ভিয়েনাসহ অনেক জায়গা যায়। আমরা অনেক কাজ এগিয়ে নিয়ে আসি, নীতিমালা তৈরি করি। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসে জমি দেখে যায়। এরপর ২০০১ সালে ক্ষমতায় না আসতে পারায় এ কাজ আর এগোয়নি। বিএনপি-জামায়াত জোটও এসব বিষয়ে কোনো কাজ করেনি।’

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর আমি আবার এ ব্যাপারে উদ্যাগ নিই। সে সময় আমি রাশিয়ায় যাই। সেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে আলোচনা করি এবং এ নিয়ে আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করে আসি। তখন পারমাণবিক পাওয়ার প্লান্টে সর্বাধিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনা হয় এবং এ নিয়ে কয়েক দফা মিটিংও হয়। তারপর ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর আমরা প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করি।’