প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় এমভি রূপসী-৯ জাহাজের আটজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপপরিচালক বাবুলাল বৈদ্য বাদী হয়ে গতকাল বিকালে মামলাটি করেন বলে বন্দর থানায় ওসি দীপক চন্দ্র সাহা জানান।
মামলার আসামিরা হলেনÑরূপসী-৯ জাহাজের মাস্টার রমজান আলী শেখ, নুরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম, নাদিম হোসেন, লস্কর সুমন হোসেন, ইয়াসিন, সুকানি জাহিদুল ইসলাম ও গ্রিজার রিয়াদ হোসেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত সংস্থা নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে গতকাল বিকালে আট আসামিকে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয় বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান।
তিনি বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক কাউসার আলম প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত রোববার দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদরের সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন পণ্যবাহী জাহাজ রূপসী-৯ পেছন থেকে চাপা দিলে ডুবে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন। পালিয়ে যাওয়া জাহাজটিকে বিকালে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার একটি ডকইয়ার্ড থেকে জব্দ ও কর্মীদের আটক করে নৌ-পুলিশ।
গতকাল সকালে লঞ্চটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরই মধ্যে আটটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে চারজন। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ-পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মীরা উদ্ধারকাজে অংশ নেন। লাশের খোঁজে তল্লাশি এখনও চলছে। এ ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে সব পথে ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মামলার বাদী বলেন, ‘মামলায় আসামিদের কঠোর শাস্তি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।’ এ ব্যাপারে মতিঝিলের নৌ আদালতে আরেকটি মামলা হবে বলে জানান তিনি। বন্দর থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বেপরোয়া গতিতে জাহাজ চালিয়ে নরহত্যা, জখম, গুরুতর জখমসহ ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। মামলার আসামিদের নৌ পুলিশের হেফাজতে আদালতে পাঠানো হবে।’ নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। মামলাটির তদন্ত করছে নৌ পুলিশ।’