ক্রীড়া ডেস্ক: ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গিয়েছিল আগেই। শুধু দেখার ছিল কতটুকু লড়াই করতে পারে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডের গড়া ইংল্যান্ড সে সুযোগই দেয়নি অজিদের। তাতে ২৪২ রানের রেকর্ড ব্যবধানের জয় সঙ্গে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে ইয়ন মরগানের দল।
ট্রেন্ট ব্রিজে গত পরশু টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ড করেছিল ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৪৮১ রান। তাতে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ দলীয় রানের নতুন রেকর্ড গড়ে দলটি। এর আগে এ রেকর্ডটিও ছিল মরগানের দলটির। ২০১৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংলিশরা ৪৪৪ রান করে শ্রীলঙ্কাকে টপকে গিয়েছিল। জবাব দিতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ঝড়ো শুরু করলেও তা ক্রমেই স্থির হয়ে যায়। যে কারণে মাত্র ৩৭ ওভারেই ২৩৯ রানে গুটিয়ে যায় টিম পেইনের দল। অজিরাও পেয়ে যায় বিশাল জয়। ওয়ানডেতে রানের হিসেবে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় জয় এটিই। ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১০ রানে জয় ছিল আগের সবচেয়ে বড় জয়। এদিকে অস্ট্রেলিয়ারও এটি সবচেয়ে বাজে হার। ১৯৮৬ সালে নিউজিল্যান্ডের কাছে দলটি হেরেছিল ২০৬ রানে।
ব্যাটিংয়ে নেমেই অজি বোলারদের ওপর ঝড় তোলেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। ১৯ ওভার ৩ বল, তারা দলীয় স্কোর বোর্ডে রান জমা করেন ১৫৯! এরপর অবশ্য দুর্ভাগ্যক্রমে ৬১ বলে ৭টি চার ও ৪টি ছয়ে ৮২ রান করে রান আউটের ফাঁদে পড়েন জেসন রয়। তবে একপ্রান্ত আগলে বেয়ারস্টো নিজের স্বাভাবসুলভ ভঙ্গিতেই এগিয়ে যান। একপর্যায়ে এ ডানহাতি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত ৯২ বলে ১৫টি চার ও ৫টি ছয়ে ১৩৯ রান করে থামেন। এর ফলে ভাঙে অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে তার ১৫১ রানের জুটি।
নিজেদের রেকর্ড ভাঙার দিনে মরগান পেয়েছেন ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি, যা ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরি। ৩০ বলে ৩ চার ও ৬টি ছয়ে ৬৭ রান করে পরে আউট হয়ে ফিরেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। থেমে থাকেননি হেলসও, ৬২ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি থামেন ১৪৭ রানে।
জবাব দিতে নেমে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করে অজিরা। কিন্তু সেটা তারা পেরেছে সামান্যই। ওপেনার ট্রাভিস হেড করেছেন সর্বোচ্চ ৩৯ বলে ৫১। এছাড়া স্টয়নিসের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান।
ইংল্যান্ডের হয়ে আদিল রশিদ নেন ৪৭ রানে ৪ উইকেট। মইন আলি দখলে নেন ২৮ রানে ৩ উইকেট। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিজের করে নিয়েছেন অ্যালেক্স হেলস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৪৮১/৬ (রয় ৮২, বেয়ারস্টো ১৩৯, হেলস ১৪৭, বাটলার ১১, মরগান ৬৭, মইন ১১, রুট ৪*, উইলি ১*; স্ট্যানলেক ০/৭৪, রিচার্ডসন ৩/৯২, অ্যাগার ১/৭০, টাই ০/১০০, ম্যাক্সওয়েল ০/২১, স্টয়নিস ০/৮৫, ফিঞ্চ ০/৭, শর্ট ০/২৩)
অস্ট্রেলিয়া: ৩৭ ওভারে ২৩৯ (শর্ট ১৫, হেড ৫১, মার্শ ২৪, স্টয়নিস ৪৪, ফিঞ্চ ২০, ম্যাক্সওয়েল ১৯, পেইন ৫, অ্যাগার ২৫, রিচার্ডসন ১৪, টাই ৫*, স্ট্যানলেক ১; উড ০/৩৮, উইলি ২/৫৬, রুট ০/১৯, মইন ৩/২৮, প্লাঙ্কেট ০/৪১, রশিদ ৪/৪৭)।
ফল: ইংল্যান্ড ২৪২ রানে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ৩-০তে এগিয়ে
ম্যাচসেরা: অ্যালেক্স হেলস