মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: টানা পাঁচ কার্যদিবস উত্থানের পর গতকাল নি¤œমুখী হয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক। তবে সূচক কমলেও এক বছর পর ডিএসইতে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। এদিন লেনদেন হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করেছে।
গত পাঁচ কার্যদিবস অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর বৃদ্ধির পাওয়ার পাশাপাশি সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। গতকাল সকালের দিকেও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ে। ফলে দিনশেষে নি¤œমুখী হয় সূচক। গতকাল দিন শেষে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ পয়েন্ট কমে স্থির হয় চার হাজার ৭৪০ পয়েন্টে। লেনদেন হয় এক হাজার ২১ কোটি টাকা। এর আগে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২৪ কোটি টাকা।
এদিকে গতকাল বাজারে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি থাকায় শেয়ারদর কমে। ফলে লেনদেন বৃদ্ধি পেলেও অধিকাংশ শেয়ার এবং ইউনিটের দর কমে যাওয়ায় বাজার মূলধন কমে গেছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি। গতকাল দিনশেষে বাজার তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মোট বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে রেকর্ড লেনদেনের দিনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রেবিন্দুতে ছিল বস্ত্র খাত। এদিন মোট লেনদেনের প্রায় ১৫ শতাংশ ছিল বস্ত্র খাতের দখলে। পরের অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের। মোট লেনদেনে এই খাতের অবদান ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। লেনদেনে এই খাতের অবদান ছিল ১৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এদিকে ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ লেনদেন করে পরের অবস্থানে ছিল জ্বালানি ও শক্তি খাত। লেনদেন বিমা খাতের অবদান ছিল ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
এর পরের অবস্থানে ছিল ব্যাংক। তুলনামূলকভাবে গতকাল ব্যাংক শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম ছিল। যে কারণে গতকাল দিনশেষে মোট লেনদেনে এই খাতের অবদান দেখা যায় সাত দশমিক ৭৯ শতাংশ।
এদিকে গতকালের সূচক হ্রাস পাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বাজারসংশ্লিষ্ট সবাই। তাদের অভিমত, বাজার ভালো থাকায় গতকাল বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নিয়েছেন। কারণ তিন দিন আগেও যারা শেয়ার এবং ইউনিট কিনেছেন তাদের শেয়ার গতকাল বিক্রয় যোগ্য হয়েছিল। যে কারণে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করেছেন। আর বিক্রির চাপ বেশি থাকলে সবসময়ই সূচক নিম্নমুখী হতে দেখা যায়। গতকালও এর ব্যতিক্রম ছিল না। ফলে এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
এদিকে কয়েকদিন বাজার ভালো থাকলেও এটা স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা এখনও কাটেনি। তারা জানান, গতকালের সূচক হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক। স্বাভাবিক নিয়মেই গতকাল সূচক কমেছে। তারা শঙ্কিত বাজার দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল থাকবে কি না। বিনিয়োগকারীরা জানান, ২০১০ সাল থেকে বাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নেই। মাঝে মধ্যে বাজার ভালো হলেও তা স্থায়ী হয়নি। তাই বাজারে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নিয়ে সবসময় দোলাচলে থাকতে হয় বিনিয়োগকারীদের।