শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতের পুঁজিবাজারে অন্যতম সূচক সেনসেক্স শুরু হয়েছিল ২৬ হাজার ৫৯৫ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট থেকে। আর বছর শেষ হলো ৩৪ হাজার ৫৬ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে। শুক্রবার বছরের শেষ লেনদেনের দিনে সেনসেক্স ফের গড়ল নতুন নজির। ৫২ দশমিক ৮০ পয়েন্ট এগিয়ে ১০ হাজার ৫৩০ দশমিক ৭০ পয়েন্টে লেনদেন শেষ করেছে আরেক সূচক নিফটিও। খবর আনন্দবাজার।
বছরের শেষ লেনদেনের দিন ডলারে রুপির দামও বেড়েছে ২১ পয়সা। এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ৮৭ রুপিতে। গত চার মাসে রুপির এ দামই সর্বোচ্চ। আর গত এক বছরে মুদ্রাটির দাম বেড়েছে চার রুপি পাঁচ পয়সা।
চলতি বছরে লগ্নিকারীদের নিরাশ করেনি শেয়ারবাজার। এ বছর পুঁজি ঢেলে প্রায় ৪৫ দশমিক ৫০ লাখ কোটি টাকার সম্পদ বাড়িয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বছর শেষে বিএসইতে নথিভুক্ত সংস্থাগুলোর মোট শেয়ারমূল্য পৌঁছেছে এক কোটি ৫১ লাখ ৭৩ হাজার ৮৬৭ কোটি রুপিতে। এতে সেনসেক্সে এ বছর পয়েন্ট বেড়েছে সাত হাজার ৪৩০। ২০১৬ সালে সূচকটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছিল ৫০৮ দশমিক ৯২ পয়েন্ট।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এ উত্থানের বড় কারণ ছিল গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি)। নতুন কর নিয়ে নানা মহলের বিস্তর অভিযোগ থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে একে দেশের অর্থনীতির তুরুপের তাস বলে মনে করেছেন লগ্নিকারীরা।
মিরে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট মিউচুয়াল ফান্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্বরূপ মহান্তি বলেন, ‘আমার মনে হয় আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে জিএসটির সমস্যাগুলো মিটে যাবে। তখন সংস্থাগুলো এর সুফল পুরোপুরি টের পাবে। ফলে আরও উঠবে বাজার।’
যদিও সূচকের টানা তেজিভাব থাকা নিয়ে চিন্তিত স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ। তার দাবি, ‘বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি, ঘাটতির মতো অর্থনীতির মৌলিক উপাদানে ভর করে ওঠানামা করছে না। এটা হচ্ছে মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থে।’
চলতি বছরে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভরশীল থাকার ‘দুর্নাম’ ঘুচেছে ভারতের বাজারের। ব্যাংকের সুদ কমায় ঝোঁক বেড়েছে ফান্ডে লগ্নির। আর ফান্ডকে বাজারে তহবিল খাটাতেই হয়েছে। মূলত তাদের নগদেই চাঙা থেকেছে সূচক। কিন্তু পারেখের মতে, এভাবে ওঠার মধ্যে ঝুঁকি নেই, বলা যাচ্ছে না। তবে তা মাপা মুশকিল।
বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে’র পরামর্শ, শেয়ারে লগ্নির এ সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক নয়। তবে সে জন্য সূচকের প্রতি পতনে, দীর্ঘ মেয়াদে ও ভালো সংস্থার শেয়ারে লগ্নি জরুরি।
