নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকল্প বাস্তবায়নে রেট শিডিউল পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য খেয়াল খুশিমতো রেট শিডিউল পরিবর্তন করা যাবে না। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অর্থ বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে শিডিউল পরিবর্তন করতে হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে গতকাল তিনি এ নির্দেশনা দেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্গত আড়িয়াল খাঁ নদ, হাড়িভাঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনার শাখা নদী ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্র শাখা পুনর্খনন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে এ অনুশাসন দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পটি সংশোধনকালে ব্যয় বেড়েছে ৮০ শতাংশ। এত বেশি ব্যয় বাড়ার কারণ ব্যাখা করতে গিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট জানিয়েছিলেন যে, রেট শিডিউল পরিবর্তন হওয়ায় ব্যয় বেশি হারে বেড়েছে। তখন প্রধানমন্ত্রী রেট শিডিউল পরিবর্তনের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেয়া নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে সার্বিক বিষয় সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম।
ড. শামসুল আলম জানান, স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ যথযথ ব্যয় হচ্ছে কিনা সেটি তদারকিরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, আমরা তো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে অনেক প্রকল্প বরাদ্দ দিচ্ছি। কিন্তু সেগুলোর যথাযথ ব্যয় হচ্ছে কি না সে বিষয়টি নজরদারি করতে হবে। এ সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দিতে গিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে হাওর, বিল, চর এবং পাহাড়ি এলাকাকে আওতাভুক্ত করতে বলা হয়েছে।
তৃতীয় সাবমেরিন কেব্ল নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পটি উপস্থাপনের সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ভারতের সেভেন সিস্টার্সে বাংলাদেশ ব্যান্ডউইডথ রপ্তানি করছে। আর এটি রপ্তানির নিষয়ে ইতোমধ্যে ভুটানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এছাড়া সৌদি আরবও বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে তারা এখনও কোনো চুক্তি করেনি। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবং দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তৃতীয় সাবমেরিন কেব্ল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পটি গ্রহণের আরও একটি কারণ হলো দেশের প্রথম সাবমেরিনের মেয়াদ ২০২৫ সালে শেষ হয়ে যাবে। তাছাড়া দেশে প্রতি বছর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ হারে ব্যান্ডউইডথের চাহিদা বাড়ছে। এসব কারণে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। আর নির্দিষ্ট সময়ের বেশ আগেই নতুন প্রকল্প গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বলে জানান শামসুল আলম। সেই সঙ্গে সঠিক সময়ে এ রকম একটি প্রকল্প হাতে নেয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।