নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত কোম্পানি রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানি (বিডি) লিমিটেড গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে এক কোটি ৭২ লাখ ৪৪ হাজার ২০০ টাকা। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ আট কোটি ৬২ লাখ ২১ হাজার টাকা।
সর্বশেষ কার্যদিবসে শেয়ারদর ছয় দশমিক ২৩ শতাংশ বা ৬৬ টাকা ৯০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ এক হাজার ১৪১ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল এক হাজার ১৩৭ টাকা ৪০ পয়সা। দিনজুড়ে ২০ হাজার ২৫২টি শেয়ার মোট ৬৪৪ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর দুই কোটি ২৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর এক হাজার ৪১ টাকা থেকে এক হাজার ১৪১ টাকা ৫০ পয়সায় টাকায় হাতবদল হয়, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দর। গত এক বছরে শেয়ারদর ৫৩৩ টাকা ৫০ পয়সায় থেকে এক হাজার ১৪১ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠানামা করে।
২০১৭ সালের সমাপ্ত হিসাবছরে কোম্পানিটি ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে চার টাকা ১৭ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্যে দায় ছিল ৩২ টাকা ৬৯ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৮৩ টাকা ৪০ পয়সা।
প্রকৌশল খাতের কোম্পানিটি ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১৬ সালের সমাপ্ত হিসাববছরে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা আগের বছরের সমান। আলোচ্য সময়ে ইপিএস হয়েছে তিন টাকা ৯ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্যে দায় ৩৫ টাকা ৮১ পয়সা। এটি আগের বছরের একই সময় ছিল যথাক্রমে তিন টাকা আট পয়সা ও ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা। ওই সময় কর পরবর্তী আয় ছিল ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২৭২ দশমিক ৭৬ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ৪১০ দশমিক ১২। ২০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন দুই কোটি টাকা। রিজার্ভে ঘাটতির পরিমাণ আট কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির মোট ২০ লাখ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে সরকারের কাছে রয়েছে ৫১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে বাকি ৩১ দশমিক ৩৭ শতাংশ শেয়ার।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। গত সপ্তাহজুড়ে শেয়ারদর বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে প্রতিদিন দুই কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৯৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার শেয়ার।
সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির ১৪ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৩টি শেয়ার মোট ৩৯৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর সাত কোটি ৮৩ লাখ ২১ হাজার টাকা। ওই দিন শেয়ারদর ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা চার টাকা ৮০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৫২ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল ৫২ টাকা ৯০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ও সর্বোচ্চ ৫২ টাকা ৯০ পয়সায় ওঠানামা করে। এক বছরের মধ্যে দর ৩৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৫৭ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠানামা করে।
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে এক শতাংশ বেশি। ওই সময় ইপিএস করেছে দুই টাকা ৪০ পয়সা ও এনএভি ১৫ টাকা ৯৮ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে দুই টাকা ২৯ পয়সা ও ১৫ টাকা ৩৯ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ২৫ কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা আগের বছর ছিল ২৪ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
কোম্পানির ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১০৬ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৬৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে মূল্য আয় অনুপাতে ২২ দশমিক শূন্য চার এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ২৩ দশমিক ৮৩।
কোম্পানিটির মোট ১০ কোটি ৬৩ লাখ ৯২ হাজার শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৬০ দশমিক ৬৮ শতাংশ শেয়ার, সরকারের ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিডি অটোকারস লিমিটেড। কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন সাত কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩৭ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার।
সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির এক লাখ ৫৭ হাজার ৯৭৬টি শেয়ার মোট এক হাজার ৪২১ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ছয় কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ওই দিন শেয়ারদর দশমিক ৮৬ শতাংশ বা তিন টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৪০৯ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৪০৭ টাকা ৭০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৩৯২ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪১৪ টাকায় ওঠানামা করে। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ৯৯ টাকা থেকে ৪৯০ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠানামা করে।
৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত হিসাববছরে তিন শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। এ সময় ইপিএস হয়েছে ৯৫ পয়সা এবং এনএভি দুই টাকা ৮৫ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
‘বি’ ক্যাটেগরির কোম্পানি ১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির ১০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন তিন কোটি ৮৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে ঘাটতির পরিমাণ দুই কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে তিন শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। এ সময় ইপিএস ছিল ৪১ পয়সা এবং এনএভি হয়েছিল ছয় টাকা ৪৮ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
কোম্পানির মোট ৩৮ লাখ ৬২ হাজার ৫১২টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৩৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক সাত দশমিক ৪৬ শতাংশ ও বাকি ৫৪ দশমিক ২৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ইনটেক, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আপিডিসি ফাইন্যান্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক লিমিটেড।