রোগের নাম পাইলস

রোগের নাম পাইলস

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
মলদ্বারের নিম্নাংশ বা মলদ্বারের শিরাগুলো ফুলে যাওয়া চিকিৎবিজ্ঞানে পাইলস নামে পরিচিত। আমাদের দেশে এটি অর্শ্ব নামেও পরিচিত। এই অর্শ্ব মলদ্বার বা পায়ুপথের ভেতর কিংবা বাইরে হতে পারে। বৃহদান্ত্রের শেষাংশে রেকটামের ভেতর ও বাইরে কুশনের মতো একটি রক্তশিরার জালিকা থাকে, যা প্রয়োজনসাপেক্ষে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। এটিই পাইলস।
পাইলসে আক্রান্ত ব্যক্তির মলের সঙ্গে রক্ত বের হয়। অনেকের একদিন রক্ত পড়লে ছয় মাস পর আবার রক্ত পড়তে পারে। দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার পাশাপাশি শাকসবজি ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার, পানি কম খাওয়া প্রভৃতি বিভিন্ন কারণে অর্শ্ব বা পাইলস হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, সচেতনতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে পাইলস থেকে সহজে মুক্তি মেলে।

অবস্থান
স পায়ুপথের অর্শ্ব
স পায়ুপথের ভেতরের অর্শ্ব
স কখনও দুই অবস্থা একসঙ্গে হতে পারে
পায়ুপথের ভেতরের অর্শরোগ বা পাইলস ফুলে মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসাকে চারটি পর্যায় ভাগ করা হয়:
স প্রথম পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে না, বা প্রলেপস হয় না)
স দ্বিতীয় পর্যায়: মলত্যাগের পর পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে। পরে আপনা-আপনি ঠিক হয়ে যায়)
স তৃতীয় পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে। নিজে ঠিক করতে হয়
স চতুর্থ পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে, বা প্রলেপস হয়। নিজে থেকে ঠিক হয় না।

কারণ
স দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য
স পুরোনো ডায়রিয়া
স মলত্যাগে দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা
স পরিবারে কারও থাকলে
স আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া
স ভারী মালপত্র বহন করা
স স্থ‚লতা
স কায়িক শ্রম কম করা
স গর্ভাবস্থা
স পায়ুপথে সঙ্গম
স লিভার সিরোসিস।
লক্ষণ
স পায়ুপথের অন্ত্র বা ভেতরের অর্শরোগে সাধারণত কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি থাকে না
স পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগে পায়ুপথ চুলকায়
স বসলে ব্যথা করে
স পায়খানার সঙ্গে লাল রক্ত দেখা যায়
স শৌচ করা টিস্যুতে তাজা রক্ত লেগে থাকে
স মলত্যাগের সময় ব্যথা অনুভ‚ত হয়
স পায়ুর চারপাশে এক বা একাধিক স্থানে থোকা থোকা ফুলে থাকা।

করণীয়
স কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা
স নিয়মিত মলত্যাগ করা
স পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া
স প্রতিদিন আট থেকে ১০ গøাস পানি পান করা
স সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম না করা
স প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো
স ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
স টয়লেটে অধিক সময় ব্যয় না করা
স মলত্যাগে বেশি চাপ না দেওয়া
স সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া
স ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া লেকজেটিভ বেশি গ্রহণ না করা
স দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া থাকলে তার চিকিৎসা করা।

খাওয়া যাবে
স প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে লাল আটা, লাল চাল প্রভৃতি
স সব ধরনের ডাল, সালাদ, দধি, পনির, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, লেবুজাতীয় টক ফল, পাকা পেঁপে, বেল, আপেল, কমলা, খেজুর, ডিম, মাছ, মুরগির মাংস প্রভৃতি।

খাওয়া যাবে না
স খোসাহীন শস্য
স গরু ও খাসির মাংসসহ অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার
স মসৃণ চাল
স কলে ছাঁটা আটা, ময়দা
স চা, কফি, চিজ, মাখন, চকোলেট, আইসক্রিম, কোমল পানীয়
স সব ধরনের ভাজা খাবার। যেমনÑপরোটা, লুচি, চিপস প্রভৃতি।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০