রবিউল কমল: অ্যাপনিয়া শব্দটির অর্থ ‘স্টপেজ অফ রেসপিরেশন’। ঘুমের মধ্যে নিঃশ্বাসে সমস্যা দেখা দিলে তাকে স্লিপ অ্যাপনিয়া বলা হয়।
তিন ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। প্রথমটি হচ্ছে সেন্ট্রাল অ্যাপনিয়া নিউবর্ন বেবি কিংবা প্রিম্যাচিওর বেবির ক্ষেত্রে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়টি অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া। এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্তরা ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেন। শেষেরটি হচ্ছে মিক্সড স্লিপ অ্যাপনিয়া। শিশুদের মধ্যে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
কারণ ও লক্ষণ
1.ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগলে গলার অ্যাডিনয়েড ও টনসিল গ্লান্ড ফুলে বড় হয়। তখন স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। ঠাণ্ডা লাগলে রাতে ঘুমানোর সময় শিশুর নাকে ঘড়ঘড় শব্দ হয়। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সবচেয়ে বড় লক্ষণ এটি।
2. অতিরিক্ত ওজনের কারণেও স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। সেরিব্রাল পলসি, ডাউনস সিন্ড্রোম, ফেস ডিফরমিটি, দাঁতের বিশেষ সমস্যা থাকলে অনেক শিশু ঘুমের মধ্যে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগতে পারে।
3.রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হয়। ভোরের দিকে বেশি ঘুমায়। ঘুম ঘুমভাব কাটাতে অনেক সময় লাগে। অনেক শিশু স্কুলে গিয়ে কিছুতেই পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না। বয়স অনুযায়ী শারীরিক বিকাশ হয় না। অনেকে ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব করে ফেলে। মুখ হা করে ঘুমায়।
4. ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। ঘন ঘন আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্টে ইনফেকশন দেখা দেয়।
প্রতিরোধ
1. অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে শুরুতেই চিকিৎসা করিয়ে নিন। প্রথমদিকে অ্যাডিনয়েড এনলার্জমেন্ট ধরা পড়লে প্রতিরোধ করা সম্ভব। ধুলা থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
2.ওজন বাড়তে দেবেন না।
3. শিশুকে শুয়ে বা ঘুমন্ত অবস্থায় বুকের দুধ খাওয়াবেন না। বোতলের দুধ খাওয়ানোর সময়েও শিশু যেন ঘুমিয়ে না যায় বা শুয়ে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শুধু বুকের দুধ খাওয়ান। সঠিক সময়ে টিকা দিন।
4. শিশুর সামনে ধূমপান করবেন না।
নন-সার্জিক্যাল চিকিৎসা
1. নাকের অ্যালার্জির চিকিৎসা করানো।
2. অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা।
3. ঈচঅচ বা ইওচঅচ ডিভাইসের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো হয়। অবশ্য শিশুদের জন্য আমাদের দেশের এ ধরনের চিকিৎসা এখনো শুরু হয়নি।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা
নাকের অ্যালার্জির চিকিৎসার পরেও অনেকের মধ্যে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা থাকতে পারে। তখন অ্যাডিনয়েড বা টনসিল রিমুভ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অ্যাডিনয়েডের সঙ্গে দুটো টনসিলই রিমুভ করা লাগতে পারে। কারণ শুধু অ্যাডিনয়েড রিমুভ করা হলে টনসিল এনলার্জ হতে পারে।
হেলথ ইনসাইডার অবলম্বনে