Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 3:36 am

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে লুপাস

সিস্টেমিক লুপাস ইরাইথেম্যাটোসিস হলো এক ধরনের ব্যাধি। রোগটির কারণে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়ায় গোলযোগ দেখা দেয়, যা শরীরকে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস হতে সুরক্ষা দেওয়ার বদলে রোগীর টিস্যু বা কলাগুলোকে আক্রমণের পর ক্ষতিগ্রস্ত করে। লুপাসে আক্রান্ত হলে প্রথমে মুখ ও গলায় লাল ফুসকুড়ি ওঠে। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে জ্বালাপোড়াও শুরু হয়।
লুপাস কখনও অল্পমাত্রা আবার কখনও মারাত্মক রূপে ধারণ করতে পারে। রোগটি দুভাবে দেখা দেয় একটি ডিসকয়েড লুপাস, যা শুধু ত্বকে হয়ে থাকে। অন্যটি এসএলই, যা ত্বকসহ অস্থিসন্ধি, হৃৎপিণ্ড ও কিডনিতে হয়ে থাকে। ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে এ রোগটি বেশি দেখা যায়।
কারণ
সঠিক কী কারণে এ রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ তার কারণ অজানা। তবে বেশ কয়েকটি বিষয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।
# বাবা ও মায়ের এ রোগ থাকলে জিনগত কারণে সন্তানও রোগটিকে আক্রান্ত হতে পারে।
# আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি, নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের ব্যবহার, ভাইরাস, মানসিক ও শারীরিক চাপসহ আঘাতজনিত কারণে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
# পুরুষের তুলনায় নারীদের মধ্যে রোগটি বেশি দেখা যায়। গর্ভাবস্থা ও পিরিয়ডের সময় এর লক্ষণগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করে।

লক্ষণ
এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকরা কিছু লক্ষণগুলো
চিহ্নিত করেছেন।
রোগটি ধীরে ধীরে শুরু হতে থাকে। অবসাদ ও ক্লান্তিবোধ সাধারণ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। তবে প্রথম লক্ষণ হচ্ছে, ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়া, যা রোদে গেলে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া করে। বুকে তীক্ষ ব্যথা অনুভূত হয়। সারা শরীরে ব্যথা হতে পারে। অস্থিসন্ধি ও হাঁটুতে ব্যথা। পা ফুলে যাওয়া, মাংসপেশিতে ব্যথা, অস্থিসন্ধি ফুলে যাওয়া, হাড়ে ব্যথা, নিয়মিত পিরিয়ড না হওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, হাত শক্ত হয়ে যাওয়া প্রভৃতি।

চিকিৎসা
রোগটি সারা জীবনের। একবার কেউ এ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে সারা জীবন চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হয়। কেননা এ রোগ প্রতিকারের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। যথাযথ চিকিৎসায় এ রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। লুপাস রোগীদের সাধারণত কিছু টিকা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে হয়। নিউমোয়াক্কাল, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস, হেপাটাইটিস বি মেনিস মোয়াক্কাল, ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রভৃতি টিকা নিতে হয়। রোগীকে যথাসম্ভব রোদ থেকে শরীরকে বাঁচিয়ে চলতে হবে। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেতে হবে। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটও খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এছাড়া রোগটির অন্যতম প্রাকৃতিক ওষুধ হচ্ছে ব্যায়াম। এ রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা শারীরিক ব্যায়ামের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।