ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হলে জীবনযাত্রায় আনতে হয় কিছুটা পরিবর্তন। নিয়ম মেনে খাবার খাওয়া না হলে বা ওষুধ খাওয়ার সময় মেনে না চললে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ডায়াবেটিসের ওষুধ খাওয়ার নিয়ম: ডায়াবেটিক রোগীকে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়। খাওয়াদাওয়া ও ওষুধ খাওয়ার সময়ের মধ্যে সমন্বয় করতে হয়। এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিতে হয় ইনসুলিনের ডোজ। সকালের ওষুধ খাবেন ইফতার করার পরে। দুপুরের ওষুধ খাবেন রাতের খাবারের পরে। আর রাতের ওষুধ খাবেন সাহরির সময়।
যারা দুই বেলা ইনসুলিন নেন, তারা সকালের ইনসুলিনটুকু ইফতারের পর নেবেন। আগের মাত্রায়ই (পরিমাণ) নেবেন। আর রাতের ইনসুলিনটুকু নেবেন সাহরিতে। তবে পরিমাণ কমিয়ে নিতে হবে এবং সেটি আগের ডোজের অর্ধেক নেবেন। যারা দিনে এক বেলা ডোজের ইনসুলিন (ব্যাসাল ইনসুলিন) নেন, তারা সেটি ইফতারের পর নেবেন এবং রোজার আগের ডোজ থেকে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম ডোজে নেবেন।
এরপর সকাল ১০টায় সুগার মাপবেন। সুগার খুব বেশি হলে পরের রাতে সাহরিতে ডোজ আরেকটু বাড়াবেন। রোজার কারণে সুগার নিল (হাইপো) হতে পারে। তাই বিকাল ৪টায় আরেকবার সুগার মাপবেন। খুব কম হলে, অর্থাৎ ৩-এর কম হলে রোজা ভেঙে ফেলুন।
হার্টের ওষুধ খাওয়ার নিয়ম: যেসব হার্টের রোগী পানি কমানোর ওষুধ খান, তারা সেগুলো সাহরিতে খাবেন এবং আগের ডোজের চেয়ে অর্ধেক খাবেন। রক্ত পাতলা করার ওষুধটি ইফতারের পর খাবেন। কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধটি ইফতারের পর খাবেন। হার্টের বাকি ওষুধগুলো আপনি যেকোনো বেলায় খেতে পারেন। হার্টের যে ওষুধগুলো থেকে প্রেশার কমে যায়, সেই ওষুধগুলোর ডোজ কমিয়ে অর্ধেক খেতে হবে। তা না হলে প্রেশার অনেক কমে যেতে পারে।
প্রেশারের ওষুধ খাওয়ার নিয়ম: রোজার সময় যেহেতু দিনের বেলায় পানি ও খাবার খাওয়া হয় না, তাই প্রেশার এমনিতেই কমে যেতে পারে। সেজন্য প্রেশারের ওষুধ আপনাকে কমিয়ে খেতে হবে। ওষুধ কতটুকু কমাবেন, সেটি চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে ঠিক করে নিতে হবে। যারা এক বেলা প্রেশারের ওষুধ খান, তারা যেকোনো বেলায় খেতে পারবেন। যারা দুই বেলা প্রেশারের ওষুধ খান, তারা সাহরি ও ইফতারের পর খাবেন। আর যারা তিন বেলা প্রেশারের ওষুধ খান, তারা দুপুরের ওষুধটি চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে বন্ধ রাখতে পারেন।
ডা. গোলাম মোর্শেদ
মেডিসিন ডায়াবেটিস ও হƒদরোগ বিশেষজ্ঞ
গ্রিন লাইফ হসপিটাল, ঢাকা