সুষম খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাসের সিয়াম সাধনা আমাদের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান্ধব। কারণ রোজা পালনে আমাদের রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে ডিটক্সিফিকেশনের মাধ্যমে রোজা পালনের সময় আমাদের শরীরের চর্বিতে ফ্যাট ও সঞ্চিত টক্সিন ধ্বংস হয়। রোজা আমাদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ডিএনএ ড্যামেজ প্রতিরোধ করে অন্ত্রের ও খাদ্যনালির সমস্যা নিরাময় করে এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
রোজায় কী ধরনের খাবার বর্জন করা উচিত:
এক. অতিরিক্ত তেলে ভাজা ও মসলাযুক্ত খাবার, যা আমাদের পরিপাক ক্রিয়ায় বাধা দেয়; দুই. অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার, যা আমাদের শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এগুলো অবশ্যই বর্জনীয়।
রমজান মাসে প্রয়োজন সুষম খাদ্যাভ্যাস: ক. সাহরি ও ইফতার যথেষ্ট পুষ্টিকর ও পরিমিত হওয়া; খ. আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেল সংমিশ্রণে একটি সুষম খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করতে হবে; গ. আমাদের সাহরি ও ইফতারে জটিল শর্করা ও আঁশযুক্ত খাদ্য অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে। যেমনÑ খেজুর, বাদাম, খোসাসমেত ফল, শাকসবজি প্রভতি।
পানিশূন্যতা রোধে যা করণীয়: ক. ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত বয়স এবং ওজন-উচ্চতা ভেদে দৈনিক ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে; খ. পানি স্বল্পতা রোধে বিশেষ কিছু টিপসও ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন: সাহরিতে অতিরিক্ত চা-কফি পান না করা, যা আমাদের শরীরের পানি চাহিদা বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার বর্জন করতে হবে, যা আমাদের শরীরের পানি স্বল্পতা রোধে সহায়তা করবে।
রমজানে যেসব খাওয়া জরুরি-
ছোলা: ১৫০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ১৫০ কিলো ক্যালরি শক্তি আছে। এর থেকে আমাদের দৈনিক খাদ্য আঁশের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ পেতে পারি। এছাড়া এতে আছে প্রচুর আমিষ ও খনিজ।
খেজুর: সাহরি ও ইফতারÑ দুটি সময়ই খেজুর খুব পুষ্টিকর একটি খাবার। এতে আছে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের খুব চমৎকার একটি সংমিশ্রণ। অর্থাৎ খেজুরের একটি অংশ থেকে আমরা অতিদ্রুত শক্তি পাই। আবার কিছু অংশ ধীরে ধীরে দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে শক্তি প্রদান করতে থাকে।
দই-চিড়া: এতে আছে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের যুগলবন্দি। ভিন্নধর্মী খাদ্যাভ্যাসের কারণে রোজায় অনেকেরই বিভিন্ন ধরনের হজমের সমস্যা দেখা দেয়। ইফতারে দই আমাদের ডাইজেস্টিভ হেলথকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
চৌধুরী তাসনীম হাসীন
প্রিন্সিপাল ডায়েটিশিয়ান
ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা