গতকালের পর
ক্রনিক কিডনি রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার কারণেও মুখের আলসার সৃষ্টি হতে পারে। কিডনি রোগীদের মুখের আলসার বা সংক্রমণের চিকিৎসায় যথাসম্ভব অ্যান্টিবায়োটিক পরিহার করা উচিত। মুখের কোনো তীব্র সংক্রমণের কারণে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া তা কোনোভাবেই গ্রহণ করা ঠিক নয়। কারণ কিডনি রোগীদের সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক প্রদান করা যায় না। মুখের আলসার বা মুখের ব্যথা অথবা দাঁতের ব্যথার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে ট্রামাডল জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ খাবার পর সেবন করা যেতে পারে।
অনেকেরই মাত্রার অধিক প্রোটিন জাতীয় খাবার খেলে মুখের আলসারের তীব্রতা বেড়ে যায়। যাদের গ্লুটেন ইনটলারেন্স রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে গ্লুটেন ফ্রি খাবার বা ইফতার গ্রহণ করা জরুরি। গ্লুটেন ফ্রি খাবার মানে ডিম, মাংস বা গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বন্ধ করে দেয়া নয়। গ্লুটেনমুক্ত খাবার বলতে বুঝায় গম, রাই এবং বার্লিমুক্ত খাবার।
অ্যালার্জির কারণে মুখের অভ্যন্তরে আলসার এবং জিহ্বার ফোলাভাব হতে পারে। অ্যালার্জিজনিত মুখের আলসার রোগীদের রোজায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ওষুধের পাশাপাশি যেসব খাবার অ্যালার্জি সৃষ্টি করে থাকে তা বর্জন করতে হবে। এছাড়া যেসব খাবার অ্যাসিডিক, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত অথবা লবণাক্ত সেসব খাবার বর্জন করতে হবে। এসব খাবার জিহ্বায় টেস্ট বাডগুলোর প্রদাহ সৃষ্টি করে জিহ্বায় ফুলাভাব এনে দিতে পারে। এছাড়া মুখের আলসারের প্রদাহের তীব্রতা বৃদ্ধি করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ম পালন করে চলতে হবে। যদি কারও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে তাহলে লালায় চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। ধারণা করা হয় যে, ক্যানডিডা অ্যালবিকানস্ তখন এ অতিরিক্ত চিনি মুখের অভ্যন্তরে তার নিজস্ব বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করতে পারে। ক্যানডিডা অ্যালবিকানস্ ফাংগাস দ্বারা ওরাল থ্রাসের সৃষ্টি হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে এ অবস্থায় খাবার গ্রহণের সময় জিহ্বায় এবং মুখে জ্বালাপোড়া হতে পারে। রোজার মাসে নামাজ ও রোজা মানব দেহে বিশেষভাবে মনে স্থিরতা সৃষ্টি করে। মানসিক প্রশান্তির কারণে মুখের আলসারের তীব্রতা অবশ্যই কমে আসবে, বিশেষ করে যেসব মুখের আলসারের কারণ সহজে নির্ণয় করা যায় না। [শেষ]
ডা. মো. ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ