Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:08 pm

রোজায় যেমন জীবনধারা

গতকালের পর

ঘুমের বেলা: রমজানে তারাবিহর নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতে আলাদা সময় দেয়া হয়। শেষ রাতে ঝটপট উঠে যাওয়ার তাড়াও থাকে। সব মিলিয়ে ঘুমের সময়টা কমে যায়। ঘুম ঠিক রাখতে আনুষঙ্গিক কাজকর্ম কমিয়ে আনুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কম সময় ব্যয় করুন। দিনেও খানিকটা ঘুমিয়ে নিন। এতে ক্লান্তি ভাব কমে আসবে।

শরীরচর্চাও চলুক: একটা মাস খুব ভারী ব্যায়াম না করলেও ক্ষতি নেই। তবে শরীরচর্চার অভ্যাস ছাড়বেন না। মাঝারি বা হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। শরীরচর্চার জন্য দিনের প্রথম ভাগটা বেছে নিতে পারেন। রমজানে বিকালের দিকে শরীরচর্চা না করাই ভালো। রাতেও ব্যায়াম করা যায়। তবে খাওয়ার পর ১-৩ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে শরীরচর্চা করা উচিত।

রোগাক্রান্ত ব্যক্তি: রোগাক্রান্ত ব্যক্তি রোজা রাখতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে তার চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে নেয়া উচিত। রোজা রাখলে ওষুধের সময়ও এদিক-ওদিক করে নিতে হয়। এই পরামর্শ যার যার চিকিৎসকের কাছ থেকে নেয়াই ভালো হবে।

নারীর জন্য বিশেষ সময়: নারীর জীবনধারা প্রাকৃতিক নিয়মেই কিছুটা আলাদা। মাসিকের সময়টায় নারীকে পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ দেশের বহু নারী রমজান মাসে দিনের বেলায় নিজের সন্তানের সামনে পানি খেতেও সংকোচ বোধ করেন। কর্মস্থলেও তার সঙ্গী সেই সংকোচ। অথচ একজন নারীর মাসিক হতে পারে, তিনি গর্ভবতী হতে পারেন, স্তন্যদায়ী হতে পারেন, মোদ্দাকথা নানা কারণেই তিনি সিয়াম সাধনা করতে অসমর্থ হতে পারেন। এমন বিশেষ সময়ে পানি ও খাদ্য গ্রহণে ধর্মীয় বাধা নেই। বাধাটা সামাজিক। কিন্তু একটি মানবিক সমাজে এমনটা কাম্য নয়। বরং প্রয়োজন মতো তার পানি ও খাদ্য গ্রহণের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করা সবারই কর্তব্য।

সবার জন্য ভাবনা: আত্মশুদ্ধির এ মাসে মহান আল্লাহর ইবাদতে মনোযোগী হন নিষ্ঠাবান মুসলিমরা। পাশাপাশি তার সৃষ্টিকুলের প্রতিও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। বাড়িতে যিনি কাজ করেন, চুলার উত্তাপে দাঁড়িয়ে যিনি রান্না করেন, তার খেয়াল রাখাও বাকি সবার দায়িত্ব। তাকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করুন, তার বিশ্রাম নিশ্চিত করুন। আপনার অধীন কর্মরত ব্যক্তির প্রতি মানবিক আচরণ করুন। দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ান। প্রাণিকূলের প্রতি সহমর্মী হোন। তবেই সার্থক হবে সিয়াম সাধনা। [শেষ]

ডা. রাফিয়া আলম

ক্লিনিক্যাল স্টাফ, নিউরোমেডিসিন বিভাগ

স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা