Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 11:31 am

রোজায় সাধারণ কিছু সমস্যা

পানিশূন্যতা: একটানা ১৬-১৭ ঘণ্টা পানি পান না করায় প্রায় সব রোজাদার পানিশূন্যতায় ভোগেন। গরমের দিনগুলোতে পানিশূন্যতার সমস্যা আরও বেশি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোজা রেখে অচেতন হয়ে পড়লে তার মাথা নিচু করে পা ওপরে তুলে ধরুন। এর পর জ্ঞান ফিরলে প্রচুর পানি পান করুন। পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে হলে ইফতারির পর থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত স্বাভাবিক তাপমাত্রার প্রচুর পানি পান করুন। ফ্রিজের খুব ঠাণ্ডা পানি পান করবেন না। ইফতারিতে রাখুন বিভিন্ন প্রকারের শরবত। সেই সঙ্গে শসা, খিরা, পাকা কলা ও অন্যান্য ফলমূল।

কোষ্ঠকাঠিন্য: পানি পান পরিমাণ কমে যাওয়ায় রমজানে অনেকে কমবেশি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। কোষ্ঠকাঠিন্য আঁশযুক্ত খাবার কম খেলেও হতে পারে।  প্রচুর পানি পান করুন। আঁশযুক্ত খাবার, যেমনÑআটা, শিমের বিচি, ছোলা, শাকসবজি, খেজুর, পেয়ারা, সফেদা, আপেলÑ এসব ফলমূল বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস করুন। চিনি, মিষ্টি ও ময়দা অপেক্ষাকৃত কম সেবন করবেন। এসবের পরও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হলে ল্যাক্সিটিভ, যেমনÑইসুবগুলের ভুসি এবং ল্যাকটুলোজ জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।

বদহজম ও পেট ফেঁপে যাওয়া: খাবারের পরিমাণ বেশি হলে, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার খেলে রোজাদারদের অনেক সময় পেট ফেঁপে যায়, পেটে শব্দ হয়, পায়ুপথ দিয়ে ঘন ঘন বায়ু বের হয়। খাবার ঠিকমতো হজম না হলে এ রকম হতে পারে। অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ বা ফলের রস পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে খাবারের তালিকা থেকে এসবের প্রাধান্য কমিয়ে আনতে হবে। সেই সঙ্গে প্রচুর পানি ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।

মাথাব্যথা: ধূমপায়ী ও কফি পানকারীরা রমজান মাসে কফি বা ধূমপান না করায়, রমজানে ঘুমের পরিমাণ কম হওয়ায় এবং ক্ষুধা-পানিশূন্যতার জন্য সাধারণত দিনের শেষে ইফতারের আগে প্রচণ্ড মাথাব্যথা হতে পারে। সেই সঙ্গে থাকতে পারে বমি বমি ভাব। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে রোজা শুরুর সপ্তাহখানেক আগে থেকেই কফি-ধূমপান ত্যাগের অভ্যাস করতে হবে। শেষ রাতে পরিমিত ও সুষম সাহরি খেতে হবে। সেই সঙ্গে প্রচুর পানি পান করতে হবে। রোজা রেখে রোদে বেশি ঘোরাঘুরি করবেন না। বাইরে বের হলে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন। মাথাব্যথা অসহ্য হলে সাহরির পর প্যারাসিটামল খেতে পারেন, ইবাদত পর্ব শেষ করে দ্রুত ঘুমানোর অভ্যাস করুন। 

ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার

অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগ

জাতীয় হƒদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল