প্রতিনিধি, জাবি: “সারাদিন রোজা রেখে তিন হলের ক্যান্টিনে ঘুরেও কপালে ইফতার জুটলো না,বাইরে আলাদা দোকানও নেই,আজ রাতে হলের ক্যান্টিনে সেহেরির ব্যবস্থাও নেই,সত্যিই বুঝতে পাচ্ছি না কোথায় এলাম!সেহেরি,ইফতার ছাড়া এমন বিভীষিকাময় রমজান পালন করতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি।” এমন আক্ষেপ করছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের ৫২তম আবর্তন এক শিক্ষার্থী।
শুরু হয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ সিয়াম সাধনার রমজান মাস। রমজানে ভালো সেহরি ও ভালো ইফতার করা সবারই আকাক্সক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সেই আকাক্সক্ষা যেন ধরার ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। সেহরিতে ক্যান্টিনের বাসি খাবার, ইফতারে স্বাস্থসম্মত খাবার না পাওয়া, খাবারের দাম উচ্চমূল্য এসব যেন নিয়মিত ভোগান্তির কারণ।
বলছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। রমজান মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগে ক্লাস, টিউটোরিয়াল, চূড়ান্ত পরীক্ষা, ভাইভা সবই চলমান রয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকাল নয়টা থেকে দুপুর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম চালু রেখেছেন। কিন্তু হলের ডাইনিং এ রাখা হয়নি কোনো সেহরির ব্যাবস্থা। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। গভীর রাতে হল থেকে গিয়ে বাইরের দোকানে অর্থাৎ বটতলা, সালাম বরকত হলের মোড়, রফিক – জব্বার হল সংলগ্ন দোকানে গিয়ে সেহরি খাওয়া শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে ছাত্রীদের সেহরির সময় নিয়মিত হলের বাইরে গিয়ে বটে বা অন্যান্য খাবার দোকানগুলোতে গিয়ে সেহরি খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবুও এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেই হল প্রশাসনের।
বর্তমানে জাবিতে মোট ১৯ টি আবাসিক হল চালু রয়েছে। এর মধ্যে আল-বেরুনী হল, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহীদ সালাম বরকত হল, রফিক-জব্বার হলে চালু নেই সেহরির ব্যাবস্থা। তবে মওলানা ভাসানী হল, মীর মশাররফ হোসেন হল, শেখ হাসিনা হল সহ মেয়েদের সবকটি হলে চালু রয়েছে সেহরির ব্যাবস্থা।
এ বিষয়ে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নিগার সুলতানা বলেন, আমার জানা মতে মেয়েদের সবগুলো হলে সেহরিতে ডাইনিং চালু রয়েছে। শুধুমাত্র যেসকল হলে গ্যাসের সুবিধা নেই, সেই হলগুলোতে ডাইনিং চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের কাছে কোনো ইনফরমেশন আসলে আমরা যথাযথ ব্যাবস্থা নিবো এবং সেহরি চালুর ব্যাবস্থা করবো।
উল্লেখ্য, জাবিতে ১৯ টি আবাসিক হলের মধ্যে পাঁচটি হলে কোনো ডাইনিং চালু নেই। এছাড়া আবাসিক হলের ক্যান্টিনে নেই স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ব্যাবস্থা। উচ্চমূল্যে খাবার কিনে খেতে হয় শিক্ষার্থীদের।
