রোবট নিয়ে সারাবেলা

আব্দুল্লাহ আল নোমান: রোবোসাস্ট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবট-বিষয়ক সংগঠন। ২০১১ সালে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী নওশাদ সজীবের ‘রোবটিক হ্যান্ড’ উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে পথচলা শুরু এ সংগঠনের। বোর্ডে লিখতে সক্ষম ছিল এ ‘নকলহাত’। শুরুতে একা কাজ করলেও দুই বছরের ব্যবধানে তার সঙ্গে কয়েক শিক্ষার্থী যুক্ত হন। গড়ে ওঠে রোবোসাস্ট।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সদস্যসংখ্যা। মূলত শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কারণে ২০১৬ সালে সৃজনশীল সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে রোবোসাস্ট। ‘রোবোসাস্ট সৃজনশীল তরুণদের প্ল্যাটফর্ম। রোবট তৈরির পাশাপাশি নানা সমস্যা সমাধানের জন্য নানা রকম ডিভাইস তৈরিতে আমরা উৎসাহ দিয়ে থাকি।’ জানালেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা নওশাদ সজীব।

নবীনদের রোবটিকস বিষয়ে পাঠদান করে সংগঠনটি। ল্যাব সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় টুল্সও সরবরাহ করে। রোবটিকস নিয়ে বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করে। এছাড়া নানা প্রতিযোগিতায় দল পাঠিয়ে থাকে সংগঠনটি। ২০১৪ সাল থেকে বড় পরিসরে চারটি কর্মশালার আয়োজন করেছে তারা।

ড. ওয়াজেদ মিয়া আই আইসিটি ভবনের একটি কক্ষ ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করছে রোবোসাস্টের সদস্যরা। ২০ জনের বেশি শিক্ষার্থী এখানে নিয়মিত কাজ করেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সময় এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় অর্ধশতাধিকে। মজার বিষয়, সব সময় খোলা থাকে ল্যাবের দুয়ার।

এখন পর্যন্ত নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাতটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোবোসাস্ট। তাদের ঝুলিতে রয়েছে আরও ১৫টির মতো পুরস্কার। ২০১৫ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক টেক ফেস্টে অংশ নিয়েই বাজিমাত করে এর সদস্যরা। জিতে নেয় দ্বিতীয় রানারআপের পুরস্কার।

বর্তমানে ‘রিবো’ ও ‘মার্সরোভার সাস্ট’ নামে দুটো বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে সংগঠনটি। কথা বলতে পারা সোশ্যাল ইন্টারেকশন রোবট হচ্ছে রিবো। এ প্রকল্পে তাদের পাশে রয়েছে বাংলাদেশ সায়েন্সফিকশন সোসাইটি। মার্সরোভার সাস্ট হচ্ছে মঙ্গল গ্রহ নিয়ে গবেষণার একটি প্রকল্প। প্রকল্পটির জন্য গত বছর পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ‘ইউরোপিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ’ এ অংশগ্রহণের সুযোগ আসে। কিন্তু ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অংশ নিতে পারেনি দলটি।

সংগঠনটির সভাপতি ফারহানুল ইসলাম বলেন, ‘রিবো পূর্ণাঙ্গ মানুষের মতো কাজ করতে পারবে। আর মার্সরোভার সাস্ট ভবিষ্যতে মঙ্গলে যাবে। দ্বিতীয় প্রকল্পটি নিয়ে এ বছর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।’

সংগঠনটির সদস্যরা মূলত ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে প্রজেক্টের কাজ করে থাকে। তাই প্রয়োজনীয় তহবিলও নিজেদেরই জোগাড় করতে হয়। কর্মশালা আয়োজন হতে প্রাপ্ত অর্থ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় চলে সংগঠনটি। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় টি-শার্ট বিক্রি থেকেও অর্থ সংগ্রহ করে তারা।

সংগঠনটির বর্তমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক তৌফিক রহমান বলেন, ‘‘বর্তমানে নিয়মিত কাজের বাইরে কর্মশালা চলছে। শিগগিরই ‘আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা’ আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের রোবটিকসে আগ্রহী করতে উদ্যোগ নেবে আমাদের সংগঠন।’’

রোবটিকসের সমস্যা ও সম্ভাবনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রজেক্টগুলোর জন্য পর্যাপ্ত অর্থসহায়তা প্রয়োজন। প্রয়েজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হলে দেশে বিজ্ঞান গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে রোবোসাস্ট।’

 

শিক্ষার্থী

 

 

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০