নিজস্ব প্রতিবেদক: আপন জুয়েলার্সের জব্দকৃত সোনা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত না দিলে আগামী রোববার (১১ জুন) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। একই সঙ্গে সোনা আমদানির নীতিমালা ঘোষণারও দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
গতকাল বুধবার বায়তুল মোকাররমে সমিতির কার্যালয়ে বৈঠকের পর সংগঠনের সহ-সভাপতি এনামুল হক খান দোলন সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বাজুসের অন্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে বাজুস জানায়, রোরবার থেকে সারা দেশের সোনার দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ১৫ জুন সারা দেশের জুয়েলার্স ব্যবসায়ীদের নিয়ে ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে। একইসঙ্গে আগামী ১২ জুন দুপুর ১২টায় অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে বায়তুল মোকাররম মার্কেট থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রারও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।
এ ছাড়া শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর ‘অন্যায়ভাবে’ আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণালঙ্কার আটক করেছে বলে দাবি করে সমিতি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আটক করা স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে জুয়েলার্স সমিতি। পাশাপাশি শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খানের অপসারণও দাবি করেছেন তারা। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মইনুল খান জুয়েলারি শিল্পকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে বলে তারা দাবি করেন। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির নেতারা সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মূল অভিযোগ গোয়েন্দা মহাপরিচালকের ওপর এমন উল্লেখ করে এনামুল হক বলেন, ‘দেশের জুয়েলারি শিল্পকে ধ্বংসের জন্য নীলনকশা হয়েছে। তা বাস্তবায়নে কাজ করছে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খান।’
এনামুল হক বলেন, ‘এ শিল্পকে ধ্বংসের জন্য কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীদের স্বর্ণ আটক করা হচ্ছে। সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে মহাপরিচালক (মইনুল খান) এর আগে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের হয়রানি করবেন না। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি। তিনি বলেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই অভিযান চালাবেন।’
এনামুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারবিরোধী চক্র মইনুল খানকে এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে। তার দ্রুত অপসারণ প্রয়োজন। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
প্রসঙ্গত, বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে আটক করা ৫৬৭ দশমিক ৫৪ কেজি (১৫ দশমিক ১৩ মণ) সোনা এবং সাত হাজার ৩৬৯টি ডায়মন্ডখচিত স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। বনানীর এক হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধুদের নাম আসার পর শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ আপনের সোনার উৎস নিয়ে এ তদন্ত শুরু করে।
Add Comment