Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:34 am

রোমানিয়ার পথে হাদিসুরের মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে হামলায় নিহত হাদিসুর রহমানের মরদেহ ইউক্রেন বাংকার থেকে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি ওই জাহাজে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। রোমানিয়ার বুখারেস্টে নেয়া হবে মরদেহটি।

গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাদিসুরের মরদেহ মলদোভার উদ্দেশে ইউক্রেন থেকে রওনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসাইন। তিনি বলেন, হাদিসুর রহমানের মরদেহ রোমানিয়ায় পাঠানোর সব দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবারই মরদেহবাহী কফিনটি রোমানিয়ার উদ্দেশে যেতে পারত। তবে রোমানিয়া কর্তৃপক্ষ হাদিসুরের পরিবারের সম্মতিপত্র চায়।

বাংলাদেশ থেকে তার পরিবারের সম্মতিপত্র পাঠানো হয়। সব শেষ করে মরদেহবাহী কফিনটি আজ রোমানিয়ার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মরদেহটি বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মলদোভায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সেখান থেকে রোমানিয়ার বুখারেস্টে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পৌঁছাতে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১২টা বাজতে পারে। তবে হাদিসুরের মরদেহ কবে নাগাদ বাংলাদেশে আসবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

এদিকে ইউক্রেনে হামলার শিকার ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিক বুধবার দুপুর ১২টার দিকে দেশে ফেরেন। সেদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ উইংয়ের মহাপরিচালক সিকদার বদিরুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হাদিসুর রহমানের মরদেহ খুব শিগগিরই দেশে নিয়ে আসা হবে। তবে সময়টা ফিক্সড করে বলা যাবে না। 

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর চ্যানেলে আটকে পড়ে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। ২ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই জাহাজে হামলা হয়। এ হামলায় হাদিসুর মারা যান। জাহাজটিতে মোট ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন।

পরে জীবিত ২৮ নাবিককে ৩ মার্চ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ইউক্রেনের একটি বাংকারে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের নিরাপদে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর ইউক্রেনের একটি বাংকারে ফ্রিজআপ করে রাখা হয় হাদিসুরের মরদেহ।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। চলমান পরিস্থিতি শুরু হলে শেষ মুহূর্তে পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এ জাহাজ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অলভিয়া বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।