শেয়ার বিজ ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়িত করার পর সেখানে বৌদ্ধ আদিবাসীদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। রাখাইনের কয়েকটি গ্রাম সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে বার্তা সংস্থা এএফপি গত শুক্রবার একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলের যেসব গ্রাম একসময় মুসলিম অধ্যুষিত ছিল, সেসব গ্রামে বৌদ্ধ রাখাইন আদিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। গ্রামের প্রবেশপথে বাঁশের মাথায় টানিয়ে রাখা হয়েছে বৌদ্ধদের পতাকা। ছোট ছোট টিনের এসব দোচালা ঘরে বৌদ্ধ আদিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যাতে আর সেখানে বসতি গড়তে না পারে, সেই লক্ষ্যে রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামে নতুন করে বৌদ্ধদের পুনর্বাসনের জন্য এসব আবাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। এই গ্রামগুলো ছিল রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর। বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনারা বুলডোজার চালিয়ে মিশিয়ে দিয়েছে গ্রামগুলো। মুছে ফেলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের পুড়ে-যাওয়া বাড়িঘরের ক্ষতচিহ্ন। এসব গ্রাম নতুন করে চাষাবাদের উপযোগী করে তুলছে তারা। দক্ষিণাঞ্চলের তুলনামূলক স্থিতিশীল ও দরিদ্র এলাকা থেকে রাখাইন জনগোষ্ঠী এখন সেখানে আসতে শুরু করেছে। রাখাইনে নতুন বসতি গড়া বৌদ্ধরাও চান না রোহিঙ্গারা ফিরে যাক।
রাখাইন রাজ্যের গৃহবধূ সিত সান এইন এএফপিকে বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ভয় পাই। আমরা চাই না তারা আর ফিরে আসুক। এখন তারা এখানে থাকবে না। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে বসবাসের সুযোগ পেয়েছি আমরা।’ একসময়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গা মুসলিমদের এলাকায় এখন দেশটির একটি দাতাগোষ্ঠী বৌদ্ধদের স্থায়ী বসতি গড়ার জন্যে নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। রোহিঙ্গাদের অনুপস্থিতিতে সেখানে সরকারি, বেসরকারি ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজও চলছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরে যেতে পারলেও ফেলে আসা নিজ ভূখণ্ড কি ফিরে পাবে, নাকি কোনো নো-ম্যান্স ল্যান্ডে জায়গা হবে তাদের, সেটাই দেখার বিষয়। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে গত বছরের নভেম্বরে দেশটির সঙ্গে সমঝোতা হয়। এ অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যেই প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও শুরু হয়নি।