Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 5:07 am

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চার শর্ত মিয়ানমারের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে আগ্রহ দেখালেও চারটি শর্তের কথা বলেছে মিয়ানমার সরকার। গত শুক্রবার ভারত-মিয়ানমার সম্পর্ক নিয়ে ইয়াঙ্গুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শরণার্থী বিষয়ে দেশটির এ অবস্থান প্রকাশ পায় বলে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে।

কলকাতার ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ, ইয়াঙ্গুনের ভারতীয় দূতাবাস এবং মিয়ানমারের বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ইউ কিইয়াও জেয়া ওই চারটি শর্ত উল্লেখ করেছেন বলে জানানো হয়েছে খবরে। শর্ত চারটি হচ্ছে, যেসব রোহিঙ্গা এ দেশে দীর্ঘদিন বসবাসের প্রমাণপত্র দাখিল করতে পারবেন, স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরতে চাইবেন, পরিবারের কেউ এদিকে রয়েছেন তেমন প্রমাণ দেখাতে পারবেন এবং বাংলাদেশে জš§ানো শিশুগুলোর বাবা-মা উভয়েই মিয়ানমারের স্থায়ী বাসিন্দা প্রমাণিত হলে তবেই তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

কিন্তু বাংলাদেশে শরণার্থী জীবন কাটানো ১০ লাখ রোহিঙ্গা ফেরতে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দেওয়া এসব শর্ত পূরণে নানা জটিলতা দেখছেন কক্সবাজারে শরণার্থী শিবির ঘুরে আসা বিদেশি অনেক ক‚টনীতিক। তারা বলছেন, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার পর প্রাণ বাঁচাতে যারা ভিটেমাটি ছেড়ে এসেছেন, তাদের কাছে নিজেদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে প্রমাণের কোনো নথি না থাকাটাই স্বাভাবিক। এ সমস্যার কথাও উঠে আসে ওই সেমিনারে। এর জবাবে ইউ কিইয়াও জেয়া বলেন, স্কুলে পড়া, হাসপাতালে চিকিৎসা, চাকরির নথির মতো কিছু প্রমাণ তো দেখাতেই হবে। না হলে ফেরত নেওয়াটা মুশকিল। শরণার্থী সংকটের বিষয়ে কেন এত কড়া শর্তÑতার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, রাখাইন প্রদেশের এ সমস্যা কেবল মানবিক বিষয় নয়। নিরাপত্তাও একটা বড় কারণ। রাখাইনে সমস্যা সমাধানে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়াকে নিজেদের আন্তরিকতার প্রমাণ হিসেবে দেখিয়েছেন ইউ কিইয়াও জেয়া।

এদিকে নিউ লাইট অব মিয়ানমার খবর দিয়েছে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মংডুতে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) দেওয়া শুরু করেছে মিয়ানমার সরকার। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসরণ করে যাচাইয়ের মাধ্যমে কারা মিয়ানমারের নাগরিক, তা নিশ্চিত হয়ে এ এনভিসি দেওয়া হচ্ছে। ওই আইনে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার করেনি মিয়ানমার, যা নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে বহু কাল ধরে রাখাইনে বসবাসরত এ মুসলিম জনগোষ্ঠীর।