Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 5:51 pm

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিতে জাতিসংঘকে পাশে চান প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের যেহেতু শিগগিরই নিজ দেশে ফেরার নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না, তাই তাদের একটি অংশকে ভাসানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘকে পাশে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস সোমবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কথা বলেন সরকারপ্রধান। সূত্র: বাসস।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ লেখক এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, যেহেতু শিগগিরই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত জীবনের জন্য ভাসানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে।’

২০১৭ সালের আগে চার লাখের মতো রোহিঙ্গা এদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। সে বছর মিয়ানমারে দমন অভিযান শুরুর পর এ সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশে শরণার্থীর জীবন কাটানো রোহিঙ্গাদের অধিকাংশ রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার শিবিরে। ধাপে ধাপে কিছু রোহিঙ্গাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে নোয়াখালীর ভাসানচরে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের বসবাসের কারণে কক্সবাজারে ক্যাম্প ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘যদি রোহিঙ্গাদের জীবিকার ব্যবস্থাসম্পন্ন ভাসানচরে স্থানান্তর করা যায়, তাহলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। কারণ এখানে লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।’

ভাসানচরে উন্নত জীবনযাপন ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব ভাষায় লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী লুইসকে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মানবিক’ কারণে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হলেও তারা এখন বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে মানবিক সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে নৌ-বাহিনী। বিভিন্ন ধাপে কক্সবাজার থেকে এখানে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।