নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি মাদ্রাসায় হামলায় ছয় জন নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আট জনকে আটক করেছে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গতকাল শুক্রবার রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের পরিচয় জানানো হয়নি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক পুলিশ সুপার (এসপি) শিহাব কায়সার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এসপি জানান, এর আগে গতকাল শুক্রবার ভোরে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ জসিম নামের এক রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। শুক্রবার রাতভর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালানো হয়।
এদিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছয় জন নিহতের ঘটনায় উখিয়া থানায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
নিহত রোহিঙ্গারা হলেন—মাদ্রাসার শিক্ষক ও হাফেজ মো. ইদ্রীস (৩২), ইব্রাহীম হোসেন (২২), ছাত্র আজিজুল হক (২৬), ক্যাম্পের স্বেচ্ছাসেবক মো. আমীন (৩২), মাদ্রাসার শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫) ও মাদ্রাসার শিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫)। এ ছাড়া নুর কায়সার (১৫) নামের আহত এক ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে নিহত মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জানাজা ও দাফনকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার ভোররাতে বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ ব্লকে অবস্থিত দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালালে মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পাশের মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নেন। হামলাকারীদের হাত থেকে মসজিদে আশ্রয় নিয়েও রেহাই পাননি তাঁরা। হামলাকারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা মসজিদে আশ্রয় নেওয়া দুজনকে হত্যা করে।
এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল, রোহিঙ্গাদের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এই নিহতের ঘটনা ঘটে। পরে ক্যাম্পে দায়িত্বরত এপিবিএন পুলিশ মাদ্রাসায় হামলার কথা নিশ্চিত করেন।
৮ এপিবিএন-এর অধিনায়ক এসপি শিহাব কায়সার জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়া বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় গোলাগুলি এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলে চার রোহিঙ্গা নিহত হন। এ সময় আহত হন আরও ১০ থেকে ১২ জন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২-এর সদস্যেরা ওই মাদ্রাসা ও আশপাশের এলাকায় ব্লকরেইড পরিচালনা করে আসছে এবং অন্যান্য ক্যাম্প এলাকায়ও একই সঙ্গে ব্লক রেইড পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিহাব কায়সার।