রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে শেখ হাসিনার পাঁচ প্রস্তাব

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। আমেরিকার স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে এই প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভাষণের শুরুতেই রাখাইন রাজ্যের বিপন্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। তার এই ভাষণ জাতিসংঘের ওয়েব টেলিভিশনে সরাসরি প্রচার করা হয়।

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ৫ দফা প্রস্তাব হলো:

এক. কোনো শর্ত আরোপ ছাড়াই অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের ওপর সব ধরনের সহিংসতা ও জাতিগত নিধন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।

দুই. জাতিসংঘ মহাসচিবের মাধ্যমে একটি অনুসন্ধানী কমিটি গঠন করতে হবে।

তিন. জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত রাখাইনের সব নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিককে সুরক্ষা দিতে হবে। এজন্য মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি করা যেতে পারে।

চার. বল প্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত সব রোহিঙ্গা যেন নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সে ব্যবস্থা করা।

পাঁচ. রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কফি আনান কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

ভাষণের শুরুতে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া ক্ষুধার্ত-দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের মুখগুলো দেখার পরপরই আমি এখানে এসেছি। শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাসকারী ওই রোহিঙ্গারা জাতিগত নিধনের শিকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৮ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। রাখাইন রাজ্যের চলমান অস্থিরতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন আবারো বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতিকে নৃশংস করে তুলেছে। রাখাইন রাজ্যের সহিংসতা থেকে বাঁচতে প্রতিদিন বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। আইএমও এরই মধ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতা থেকে বাঁচতে ৪লাখ ৩০ হাজার মানুষের পালিয়ে আসার তথ্য দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বিস্মিত যে তাদের ফিরে যেতে না দেয়ার জন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন পুতে রেখেছে মিয়ানমার। এইসব মানুষকে অবশ্যই নিরাপত্তা সুরক্ষা ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে ফেরার সুযোগ দিতে হবে। একইসঙ্গে আমরা সব ধরনের সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।
সহিংসতা ও জঙ্গিবাদকে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নরে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি চিহ্নিত করে শেখ হাসিনা বৈশ্বিক এ সমস্যা মোকাবলোয় সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানান। শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক বিবাদ মীমাংসার ওপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০