র্যাগিং সংস্কৃতিকে পাশ কাটিয়ে…

মেহেদী কবীর: ‘এসেছে নতুন শিশু, ছেড়ে দিতে হবে স্থান’ কথাটা যে কতটুকু সত্য আর নিষ্ঠুর তা বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়ামাত্রই টের পান। ‘এই তো সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ক্লাস করেছি। অথচ দেখতে দেখতে আজ তিন বছর কেটে গেছে।’ বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে এমন কথা বলছিল হুমায়ুন শাহান।
প্রথম প্রথম আমরা ভয়ে ভয়ে সময় পার করতাম। বিশেষ করে র্যাগিংয়ের ভয় পেতাম। সে ভয়টা যেনো আমাদের বিবিএ পরিবারের নবীন সদস্যরা না পায় তাই নবীনবরণ আয়োজন করেছি। একই সুরে কথাগুলো বলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থীরা। ব্যাচটি গত ৮ ফেব্রুয়ারি আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে বরণ করে নেয় নতুনদের।
শারীরিক কিংবা মানসিক অত্যাচার করে পরিচিত হওয়ার (র্যাগিং) ধারা থেকে সরে এসে ব্যতিক্রম উপায়ে নবীনদের বরণ করে নেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ওই দিনের পর থেকে ভয় অনেকটাই কেটে গেছ এমনি জানালেন নবীন শিক্ষার্থী হবিগঞ্জের সাদিকাতুল মাওয়া মুমু।
সময়ের একটু হেরফের হলেও ৮ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ১০টা নাগাদ নবীন-প্রবীণের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের টিলাগুলো। টিলাগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে ‘নিউজিল্যান্ড’ নামে বেশ পরিচিত। টিলায় নবীন ও প্রবীণরা গোল করে বসে যান মাটিতে। এরপর শুরু হয় পরিচয় পর্ব। ‘একই বিভাগে পড়ি, তোমরা আমাদের ছোট ভাই-বোন। অথচ মুখোমুখি হলে শুধু না চেনার কারণে একে অপরকে এড়িয়ে যাওয়া হয়, যেটা ঠিক না’ অনুষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় এ কথা দিয়েই। এরপর ক্যাম্পাসে নবীন হওয়ার অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে সবার সঙ্গে ভাগ করেন সিনিয়ররা। এক ফাঁকে ‘নতুন ক্যাম্পাস, নতুন অভিজ্ঞতা। কীভাবে পড়বে, কীভাবে পড়লে ভালো রেজাল্ট করা যায়’ জুনিয়রদের এসব পরামর্শও দেন তারা। পড়ালেখার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কীভাবে নিজেদের সমৃদ্ধ করবে ছিল বিষয়ে পরামর্শও।
এভাবে সময় বয়ে যায়। দুপুরে খাবারের পাঠ চুকিয়ে সবাই মিলে ছবি তোলার কাজটা সেরে নিই আমরা। সময়ের কাছে হার মেনে একসময় সবাইকে ফিরে আসতে হয় নিজস্ব গন্তব্যে। তবে প্রথমে যে ভয়টা নবীনদের চোখেমুখে দেখা গিয়েছিল, ফিরতি পথে তা বদলে গেছে। এখন তাদের মুখগুলো পুরোপুরি আনন্দে উদ্ভাসিত।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০