ক্রীড়া ডেস্ক: দেশের বাইরে প্রথমবারের মতো গত পরশু নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাপারটা শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নেই। এ জয়ে টাইগাররা প্রথমবারের মতো ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে উঠেছে ছয়ে। খবরটি গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসির ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে। একইসঙ্গে আবার ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। দুটো বিষয়ই দেশের ক্রিকেটের জন্য ঐতিহাসিক ঘটনা, যা এরই মধ্যে বলছেন অনেকেই।
ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ শিবিরে ছিল র্যাংকিং ও বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার ভাবনা। যার ছাপটা গত পরশু ম্যাচের টস থেকে একবারে জেতার আগ পর্যন্ত টাইগারদের শরীরীভাষায় স্পষ্ট টের পাওয়া গিয়েছিল। অবশ্য শুরুটা করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার হাত ধরেই কিউইদের প্রথম উইকেটের দেখা পেয়েছিল সফরকারীরা। মাঝে টম ল্যাথাম ও নেইল ব্রম কিছুটা মাথাব্যথার কারণ হয়েছিল লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের জন্য। কিন্তু নাসির হোসেন সে ভাবনা দূর করে দেন। আর শেষ দিকে সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও রুবেল হোসেনের বোলিং তোপে ২৭০ রানেই থেমেছিল ব্লাকক্যাপরা। জবাব দিতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলে বিশ্বের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরুটা করেন তামিম ইকবাল। এরপর অবশ্য সৌম্য সরকার দ্রুতই ফেরেন
সাজঘরে। কিন্তু সাব্বির রহমানকে নিয়ে তামিম ছুটতে থাকেন জয়ের খোঁজে। দ্বিতীয় উইকেটে ১৩৬ রানের দারুণ জুটি গড়েন তারা। তখনই ম্যাচ অনেকটাই নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় বাংলাদেশ।
এর কিছুক্ষণ পরই তামিম ও সাব্বির উভয়ই সমান ৬৫ রানে সাজঘরে ফেরেন। বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেনি মোসাদ্দেক হোসেনও। তবে পঞ্চম উইকেটে সাকিব আর ও মুশফিকুর রহিম হাল ধরেছিলেন বাংলাদেশের। তাদের ৩৭ রানের জুটি আবারও পথ দেখাতে শুরু করেছিল টাইগারদের। ঠিক তখনই আত্মাহুতি দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিব। সে সময় সফরকারী দলের সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা ভয়ের সঞ্চার হয়েছিল, যদি হারে টাইগাররা। কিন্তু দুই ভায়রা মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটের সহজ তুলে নেয় মাশরাফির দল।
নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসি র্যাংকিংয়ে ছয়ে পৌঁছানোয় খুশি টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি। ‘আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল এটা। আমরা জানতাম যে ম্যাচটা জিততে পারলে ৬ নম্বরে উঠে যাবো। আরও একটা জায়গা থেকে ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে ম্যাচটা জিতে যেতে পারি তাহলে আত্মবিশ্বাস নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আমরা যা চাচ্ছিলাম সেটা করতে পেরেছি। এজন্য খুব ভালো লাগছে।’
আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা রয়েছে টাইগারদের। সেখানে কিছুটা হলেও এ জয় বাড়তি অনুপ্রেরণা দেবে বলে মনে করেন মাশরাফি। তার আগে নিজেদের প্রস্তুত করে নিতে পাকিস্তান ও ভারতের সঙ্গে আরও দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে টিম টাইগার্স। এরপর আগামী ১ জুন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।